পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8.8 s স্বামীজীর বাণী ও রচনা কোথাও তদ্রুপ নহে—এখানে কেবল কল আর কল! আবার দেখুন, ইহাদের সংখ্যা সমুদয় জগতের লোকসংখ্যার বিশ ভাগের এক ভাগ হইবে, কিন্তু ইহারা জগতের ধনরাশির পুরা এক-ষষ্ঠাংশ অধিকার করির বসিয়া আছে । ইহাদের ঐশ্বর্যবিলাসের সীমা নাই, আবার সব জিনিসই এখানে অতিশয় দুমূল্য । এখানে শ্রমিকের মজুরী জগতের মধ্যে সর্বাপেক্ষ অধিক, তথাপি শ্রমজীবী ও মূলধনীদের মধ্যে নিত্য বিবাদ চলিয়াছে। । তারপর আমেরিকান মহিলাগণের অবস্থার প্রতি সহজেই দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। পৃথিবীর আর কোথাও স্ত্রীলোকের এত অধিকার নাই । ক্রমশঃ তাহারা সব আপনাদের হাতে লইতেছে ; আর আশ্চর্যের বিষয়, এখানে শিক্ষিত মহিলার সংখ্যা শিক্ষিত পুরুষ অপেক্ষা অধিক। অবশ্ব খুব উচ্চপ্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিরা অধিকাংশই পুরুষ । এই পর্যন্ত ইহাদের ভাল দিক বলা গেল । এখন ইহাদের দোষের কথা বলি। প্রথমতঃ মিশনরীগণ ভারতবর্ষে তাহীদের দেশের লোকের ধর্মপ্রবণতা সম্বন্ধে যতই বাজে গল্প করুন না কেন, প্রকৃতপক্ষে এদেশের ছয় কোটি ত্রিশ লক্ষ লোকের ভিতর জোর এক কোটি নব্বই লক্ষ লোকে একটু আধটু ধর্ম করিয়া থাকে। অবশিষ্ট লোকে কেবল পানভোজন ও টাকা-রোজগার ছাড়া আর কিছুর জন্য মাথা ঘামায় না । পাশ্চাত্যেরা আমাদের জাতিভেদ সদ্বন্ধে যতই তীব্র সমালোচনা করুন না কেন, তাহদের আবার আমাদের অপেক্ষা জঘন্য জাতিভেদ আছে— অর্থগত জাতিভেদ । আমেরিকানরা বলে ‘সর্বশক্তিমান ডলার এখানে সব করিতে পারে। এদিকে আবার গরীবেরা নিঃস্ব । নিগ্রোদের ( যাহাদের অধিকাংশ দক্ষিণ দিকে বাস করে ) উপর ইহাদের ব্যবহার সম্বন্ধে বক্তব্য এই—উহ পৈশাচিক । সামান্য অপরাধে তাহাদিগকে বিনা বিচারে জীবিত অবস্থায় চামড়া ছাড়াইয়া মারিয়া ফেলে। এদেশে যতই আইন-কানুন, অন্ত কোন দেশে এত নাই, আবার এদেশের লোকে আইনের যত কম মর্যাদা রাখিয়া চলে, তত আর কোন দেশেই নয়। মোটের উপর আমাদের দরিদ্র হিন্দুরা এদের চেয়ে অনেক নীতিপরায়ণ । ইহাদের ধর্ম হয় ভণ্ডামি, না হয় গোড়ামি । পণ্ডিতেরা নাস্তিক, আর র্যাহারা একটু স্থিরবুদ্ধি ও চিন্তাশীল, তাহারা তাহদের কুসংস্কার ও দুর্নীতিপূর্ণ ধর্মের উপর একেবারে বিরক্ত, তাহারা নূতন আলোকের জন্য ভারতের দিকে