পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰাবলী * ബ iাধীনতা । তোমাদের পূর্বপুরুষের আত্মার স্বাধীনতা দিয়াছিলেন, তাহ র্মের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি ও বিকাশ হইয়াছে। কিন্তু তাহারা দেহকে যতপ্রকার ন্ধিনের মধ্যে ফেলিলেন, কাজেকাজেই সমাজের বিকাশ হইল না। পাশ্চাত্য দশে ঠিক ইহার বিপরীত—সমাজে যথেষ্ট স্বাধীনতা, ধর্মে কিছুমাত্র নাই । ইহার ফলে তথায় ধর্ম নিতান্ত অপরিণত এবং সমাজ স্বন্দর উন্নত হইয়া গড়িয়া উঠিয়াছে। এক্ষণে প্রাচ্যদেশীয় সমাজের চরণ হইতে বন্ধন-শৃঙ্খল ক্রমশঃ দূর হইতেছে, পাশ্চাত্যে ধর্মেরও ঠিক তাহাই হইতেছে। তোমাদিগকে অপেক্ষা করিতে হইবে এবং সহিষ্ণুতার সহিত কাজ করিয়া যাইতে হইবে । প্রত্যেকের অাদর্শ আবার ভিন্ন ভিন্ন। ভারতের আদর্শ ধর্মমুখী বা অস্তমুখী, পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক বা বহিমুখী। পাশ্চাত্য এতটুকু আধ্যাত্মিক উন্নতিও সমাজের উন্নতির ভিতর দিয়া করিতে চায়, আর প্রাচ্য এতটুকু সামাজিক শক্তিও আধ্যাত্মিকতার মধ্য দিয়া লাভ করিতে চায় । এই জন্য আধুনিক সংস্কারকগণ প্রথমেই ভারতের ধর্মকে নষ্ট না করিয়া সংস্কারের আর কোন উপায় দেখিতে পান না। র্তাহারা উহার চেষ্ট করিয়াছেন, কিন্তু বিফলমনোরথ হইয়াছেন। ইহার কারণ কি ? কারণ— র্তাহীদের মধ্যে অতি অল্পসংখ্যক ব্যক্তিই তাহাদের নিজের ধর্ম উত্তমরূপে অধ্যয়ন ও আলোচনা করিয়াছেন ; আর র্তাহাদের একজনও সকল ধর্মের প্রস্থতিকে বুঝিবার জন্য যে সাধনার প্রয়োজন, সেই সাধনার মধ্য দিয়া যান নাই ! ঈশ্বরেচ্ছায় আমি এই সমস্যার মীমাংসা করিয়াছি বলিয়া দাবী করি। আমি দৃঢ়ভাবে বলিতেছি, হিন্দুসমাজের উন্নতির জন্য ধর্মকে নষ্ট করিবার কোন প্রয়োজন নাই এবং ধর্মের জন্তই যে সমাজের এই অবস্থা তাহা নহে, বরং ধর্মকে সামাজিক ব্যাপারে যেভাবে কাজে লাগানো উচিত, তাহ হয় । নাই বলিয়াই সমাজের এই অবস্থা। আমি আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রসমূহ হইতে ইহার প্রত্যেকটি কথা প্রমাণ করিতে প্রস্তুত । আমি ইহাই শিক্ষা দিতেছি, আর আমাদিগকে ইহা কার্ষে পরিণত করিবার জন্য সারা জীবন চেষ্টা করিয়া যাইতে হইবে । কিন্তু ইহাতে সময় লাগিবে—অনেক সময় ও দীর্ঘকালব্যাপী জালোচনার প্রয়োজন। সহিষ্ণুতা অবলম্বন কর এবং কাজ করিয়া যাও। ‘উদ্ধৱেম্বাত্মনাত্মানম্। •