পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথ্যপঞ্জী & S& ম্লেচ্ছ হি যবনাস্তেষু সম্যক শাস্ত্রমিদং স্থিতম্। ঋষিবং তেহপি পূজ্যস্তে কিম্পূনদৈববিদ দ্বিজ ॥ ২১৫ জ্ঞানার্জন এই প্রবন্ধে স্বামীজী জ্ঞান উপার্জনের তিনটি মত আলোচনা করিয়াছেন : প্রথমটি--প্রাচীনপন্থীদের, যtহাদের বিশ্বাস অলৌকিক উপায়ে কয়েকজন অসাধারণ পুরুষ-মাত্র এই জ্ঞান অর্জন করিয়াছেন, তাহদের নিকট হইতে শিষ্যপরম্পরাক্রমে এই জ্ঞান সঞ্চারিত হইয়াছে । এই সকল গুরু ব্যতীত অন্য কাহারও নিকট হইতে জ্ঞানলাভ করিবার উপায় নাই । দ্বিতীয় মত-বৈদাস্তিকদিগের, র্যাহারা মনে করেন জ্ঞান স্বতঃসিদ্ধ বস্তু, উহ! প্রত্যেকের ভিতরেই পূর্ণভাবে বিরাজমান, কেবল কুকার্য বা অনাচারের দ্বারা উহার উপরে একটি আবরণ পড়িয়াছে ; সৎকর্ম, ঈশ্বরে ভক্তি, অষ্টাঙ্গযোগ বা জ্ঞানচর্চা দ্বারা ঐ আবরণ দূরীভূত হইয়া শুদ্ধ জ্ঞান বিকশিত হয়। তৃতীয় মত-প্রত্যক্ষবাদী আধুনিকদের, যাহারা মনে করেন, উপযুক্ত পরিবেশের স্বষ্টি করিলেই জ্ঞান উপার্জিত হইতে পারে। উহাতে কোন গুরুর বা মহাপুরুষের প্রয়োজন নাই। স্বামীজী এই তিনটি মত আলোচনা করিয়া বলেন : জ্ঞানমাত্রই যদি কোন পুরুষবিশেষের অধিকৃত হয়, আর ঐ-সকল পুরুষের আবির্ভাব না হওয়া পর্যন্ত যদি ঐ জ্ঞানসঞ্চারের কোনরূপ সম্ভাবনা না থাকে, তাহা হইলে সমাজে সকল প্রকার জ্ঞানলাভেচ্ছার দ্বার একেবারে রুদ্ধ হইয়া যায়। ঐ-সকল পুরুষের আবির্ভাব না হইলে কাহারও পক্ষে জ্ঞানলাভ সম্ভব নহে। - অপরদিকে গুরু বা মহাপুরুষদের সাহায্য ব্যতীত স্বেচ্ছায় পরিচালিত, হইলেই যদি জ্ঞানলাভ হইত, তাহ হইলে গুরুহীন অসভ্য সমাজেই উহার প্রথম বিকাশ দেখা ঘাইত। অতএব গুরু বা মহাপুরুষের সহায়তা ও পুরুষকার—উভয়ই জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজন। গুরুসহায় সমাজ অধিকতর বেগে অগ্রসর হয় ; কিন্তু গুরুহীন সমাজেও (পুরুষকার সাহাৰে ) কালে গুরুর উদয় ও জ্ঞানের বিকাশ হইতে পারে।