পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান সমস্যা \S* মুক্তির জন্য কোটি কোটি নরনারীকে সামাজিক আধ্যাত্মিক চক্রের নীচে নিম্পিষ্ট হইতে হইবে ? এ পেষণেরই বা কি ফল ? - দেখিতে ছ না যে,সত্ত্বগুণের ধুয়া ধরিয়া ধীরে ধীরে দেশ তমোগুণসমূদ্রে ডুবিয়া গেল। যেথায় মুহাজড়বদ্ধি পরাবিদ্যাকুরাগের ছলনায় নিজ মুখত আচ্ছাদিত করিতে চাহে ; যেথায় জন্মণলস বৈরাগ্যের আবরণ নিজের অকৰ্মণ্যতার উপর নিক্ষেপ করিতে চাহে ; যেথায় ক্রুরকর্মী তপস্যাদির ভান করিয়া নিষ্ঠুরতাকেও ধর্ম করিয়া তুলে ; যেথায় নিজের সামর্থ্যহীনতার উপর দৃষ্টি কাহারও নাই— কেবল অপরের উপর সমস্ত দোষনিক্ষেপ ; বিদ্যা কেবল কতিপয় পুস্তক-কণ্ঠস্থে, প্রতিভা চর্বিত-চৰণে এবং সর্বোপরি গৌরব কেবল পিতৃপুরুষের নামকীর্তনে— সে দেশ তমো গুণে দিন দিন ডুবিতেছে, তাহার কি প্রমাণাস্তর চাই ? অতএব সত্ত্বগুণ এখনও বহুদূর । অামাদের মধ্যে র্যাহারা পরমহংসপদবীতে উপস্থিত হইবার যোগ্য নহেন বা ভবিষ্যতে [ হইবার ] আশা রাখেন, র্তাহাদের পক্ষে রজোগুণের আবির্ভাবই পরম কল্যাণ । রজোগুণের মধ্য দিয়া না যাইলে কি সত্ত্বে উপনীত হওয়া যায় ? ভোগ শেষ ন হইলে যোগ কি করিবে ? বিরাগ না হইলে ত্যাগ কোথা হইতে আসিবে ? অপর দিকে তালপত্রবহির ন্যায় রজোগুণ শীঘ্রই নির্বাণোন্মুখ, সত্ত্বের সন্নিধান নিত্যবস্তুর নিকটতম, সত্ত্ব প্রায় নিত্য, রজোগুণপ্রধান জাতি দীর্ঘজীবন লাভ করে না, সত্ত্বগুণপ্রধান যেন চিরজীবী ; ইহার সাক্ষী ইতিহাস । ভারতে রাজ্যেগুণের প্রায় একান্ত অভাব ; পাশ্চাত্যে সেই প্রকার সত্ত্বগুণের । ভারত হইতে সমানীত সত্ত্বধারার উপর পাশ্চাত্য জগতের জীবন নির্ভর করিতেছে নিশ্চিত, এবং নিমস্তরে তমোগুণকে পরাহত করিয়া রজোগুণপ্রবাহ প্রতিবাহিত না করিলে আমাদের ঐহিক কল্যাণ যে সমুৎপাদিত হইবে না ও বহুধা পারলৌকিক কল্যাণের বিঘ্ন উপস্থিত হইবে, ইহাও নিশ্চিত । এই দুই শক্তির সম্মিলনের ও মিশ্রণের যথাসাধ্য সহায়তা করা ‘উদ্বোধনের জীবনোদ্দেশ্য । * * যদ্যপি ভয় অাছে যে, এই পাশ্চাত্যবীর্যতরঙ্গে আমাদের বহুকালাজিত রত্বরাজি বা ভাসিয়া যায় ; ভয় হয়, পাছে প্রবল আবর্তে পড়িয়া ভারতভূমিও ঐহিক ভোগলাভের রণভূমিতে আত্মাহারা হইয়া যায় ; ভয় হয়, পাছে অসাধ্য ري سرية