পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্ঞানার্জন u: সঙ্কুচিত হইয়া যায়, ঈশ্বরের কৃপায় সদাচারের দ্বারা পুনর্বিস্ফারিত হয়। অষ্টাঙ্গ যোগাদির দ্বারা, ঈশ্বরে ভক্তির দ্বারা, নিষ্কাম কর্মের দ্বারা, জ্ঞানচর্চার দ্বারা অস্তর্নিহিত অনন্ত শক্তি ও জ্ঞানের বিকাশ-ইহাও পড়া যায়। আধুনিকের অপরদিকে অনস্তস্ফর্তির আধারস্বরূপ মানব মন দেখিতেছেন, উপযুক্ত শেকালপত্র পরস্পরের উপর ক্রিয়াবান হইতে পারলেই জ্ঞানের স্ফ র্তি হইবে, ইহাই সকলের ধারণা। আবার দেশকালের বিড়ম্বন পাত্রের তেজে অতিক্রম করা যায়। সৎপাত্র কুদেশে কুকালে পড়িলেও বাধা অতিক্রম করিয়! আপনার শক্তির বিকাশ করে । পাত্রের উপর—অধিকারীর উপর যে সমস্ত ভার চাপান হইয়াছিল, তাঙ্কণও কমিয়া আসিতেছে । সেদিনকার বর্বর জাতিরাও যত্নগুণে সুসভ্য ও জ্ঞানী হইয়া উঠিতেছে--নিম্নস্তর উচ্চতম আসন অপ্রতিহত গতিতে লাভ করিতেছে। মরামিষভোজী পিতামাতার সন্তানও সুবিনীত বিদ্বান হইয়াছে, সাওতাল-বংশধরেরাও ইংরাজের কৃপায় বাঙ্গালীর পুত্রদিগের সহিত বিদ্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা স্থাপন করিতেছে। পিতৃপিতামহাগত গুণের পক্ষপাতিতা দূের কমিয়া আসিয়াছে। একদল আছেন, যাহাদের বিশ্বাস-প্রাচীন মহাপুরুষদিগের অভিপ্রায় পূৰ্বপুরুষপরম্পরাগত পথে তাহারাই প্রাপ্ত হইয়াছেন এবং সকল বিষয়ের জ্ঞানের একটি নিদিষ্ট ভাণ্ডার অনন্ত কাল হইতে আছে, ঐ খাজান পুর্বপুরুষ দিগের, হন্তে ন্যস্ত হইয়াছিল। তাহারা উত্তরাধিকারী জগতের পূজ্য। যাহাঁদের এ প্রকার পূর্বপুরুষ মাই, তাহদের উপায় ?—কিছুই নাই। তবে ধিনি অপেক্ষাকৃত সদাশয়, উত্তর দিলেন—আমাদের পদলেহন কর, সেই মুকুতিফলে আগামী জন্মে আমাদের বংশে জন্মগ্রহণ করিবে।—আর এই যে আধুনিকের বহুবিষ্ঠার'আবির্ভাব করিতেছেন—যাহা তোমরা জান না, এবং তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যে জানিতেন, তাহারও প্রমাণ নাই। পূর্বপুরুষেরা “ জানিতেন বইকি ! তবে লোপ হইয়া গিয়াছে, এই শ্লোক দেখ– । অবশ্য প্রত্যক্ষবাদী আধুনিকেরা এ সকল কথায় আস্থা প্রকাশ করেন না। অপরা ও পরা বিদ্যায় বিশেষ আছে নিশ্চিত ; আধিভৌতিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানে বিশেষ আছে নিশ্চিত ; একের রাস্ত অন্তের না হইতে পারে ; এক উপায় অবলম্বনে সকল প্রকার জ্ঞান-রাজ্যের দ্বার উদঘাটিত না হইতে পারে, কিন্তু সেই বিশেষণ ( difference ) কেবল উচ্চতার তারতম্য, কেবল