পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38 স্বামীজীর বাণী ও রচনা ( & ) লক্ষ্মেী সহরে মহরমের ভারী ধুম ! বড় মসজেদ ইমামবারায় জাকজমক রোশনির বাহার দেখে কে! বে-স্কমার লোকের সমাগম । হিন্দু, মুসলমাম কেরানী, য়াহুদী, ছত্রিশ বর্ণের স্ত্রী-পুরুষ বালক-বালিকা, ছত্রিশ বর্ণের হাজার জাতের লোকের ভিড় আজ মহরম দেখতে । লক্ষ্মেী মিয়াদের রাজধানী, আজ হজরত ইমাম হাসেন হোসেনের নামে আর্তনাদ গগন স্পশ করছে— সে ছাতিফাটানো মসিয়ার কাতরানি কার বা হৃদয় ভেদ না করে ? হাজার বৎসরের প্রাচীন কারবালার কথা আজ ফের জীবস্ত হয়ে উঠেছে। এ দর্শকবৃন্দের ভিড়ের মধ্যে দূর গ্রাম হতে দুই ভদ্র রাজপুত তামাসা দেখতে হাজির । ঠাকুর-সাহেবদের—যেমন পাড়াগেয়ে জমিদারের হয়ে থাকে— ‘বিদ্যাস্থানে ভয়ে বচ’ । সে মোসলমানি সভ্যতা, কাফ-গাফের বিশুদ্ধ উচ্চারণসমেত লস্কর জবানের পুষ্পবৃষ্টি, আবা-কবি। চুস্ত-পায়জামা তাজ-মোড়াসার রঙ্গ-বেরঙ্গ সহরপসন ঢঙ্গ অতদূর গ্রামে গিয়ে ঠাকুর-সাহেবদের স্পর্শ করতে আজও পারেনি। কাজেই ঠাকুররা সরল-সিধে, সর্বদা শিকার ক’রে জমামরদ কড়াজান আর বেজায় মজবুত দিল । ঠাকুরদ্বয় তো ফটক পার হ’য়ে মসজেদ মধ্যে প্রবেশোদ্যত, এমন সময় সিপাহী নিষেধ করলে । কারণ জিজ্ঞাসা করায় জবাব দিলে যে, এই যে দ্বারপাশ্বে মুরদ খাড়া দেখছ, ওকে আগে পাচ জুতা মার, তবে ভিতরে যেতে পাবে। মূর্তিটি কার ? জবাব এল—ও মহাপাপী ইয়েজিদের মূতি । ও হাজার বৎসর আগে হজরং হাসেন হোসেনকে মেরে ফেলে, তাই আজি এ রোদন, শোকপ্রকাশ। প্রহরী ভাবলে, এ বিস্তৃত ব্যাখ্যার পর ইয়েজিদ মূর্তি পাচ জুতার জায়গায় দশ তো নিশ্চিত খাবে। কিন্তু কর্মের বিচিত্র গতি । উন্ট সমঝলি রাম—ঠাকুরদ্বয় গললগ্নীকৃতবাস ভূমিষ্ঠ হয়ে ইয়েজিদমূর্তির পদতলে কুমড়ো গড়াগড়ি আর গদগদম্বরে স্তুতি—‘ভেতরে ঢুকে আর কাজ কি, অন্য ঠাকুর আর কি দেখব ? ভল বাবা অজিদ, দেবতা তো তুহি হায়, অস মারো শারোকো কি অভি তক্‌ রোবত। ( ধন্য বাবা ইয়েজিদ, এমনি মেরেচে। শালাদের—কি আজও কাদছে ! )