পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*N H স্বামীজীর বাণী ও রচনা দলের সঙ্গে যাচ্চি ! খাবার সময় সে শত ছোরার চকচকানি আর শত কঁাটার ঠকঠকানি দেখে শুনে তু-ভায়ার তো আকেল গুডুম । ভায়া থেকে থেকে সিটিকে ওঠেন, পাছে পার্শ্ববর্তী রাঙাচুলো বিড়ালাক্ষ ভুলক্রমে ঘাচ ক’রে ছুরিখানা তারই গায়ে বা বসায়—ভায় একটু নধরও আছেন কিনা। বলি হঁ্যাগ, সমুদ্র পার হতে হকুমানের সী-সিক্নেস’ হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে পুথিতে কিছু পেয়েছ ? তোমরা পোড়ো-পণ্ডিত মানুষ, বাল্মীকি-আল্মীকি কত জান ; আমাদের ‘গোসাইজী তে কিছুই বলছেন না। বোধ হয়— হয়নি ; তবে ঐ যে, কার মুখে প্রবেশ করেছিলেন, সেইখানটায় একটু সন্দেহ হয়। তু-ভায়া বলছেন, জাহাজের গোড়াটা যখন হুম্ ক’রে স্বর্গের দিকে উঠে ইন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ করে, আবার তৎক্ষণাৎ ভূস্ ক’রে পাতালমুখো হয়ে বলি রাজাকে বেঁধবার চেষ্টা করে, সেই সময়টা তারও বোধ হয় যেন কার মহা বিকট বিস্তৃত মুখের মধ্যে প্রবেশ করছেন। মাফ ফরমাইয়ো ভাই—ভাল লোককে কাজের ভার দিয়েছ । রাম কহো ! কোথায় তোমার সাতদিন সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা দেবে, তাতে কত রঙ চঙ মসলা বার্নিশ থাকবে, কত কাব্যরস ইত্যাদি, আর কিনা আবল-তাবল বকছি! ফলকথা, মায়ার ছালটি ছাড়িয়ে ব্রহ্মফলটি খাবার চেষ্টা চিরকাল করা গেছে, এখন খপ ক’রে স্বভাবের সৌন্দর্যবোধ কোথা পাই বলে । ‘কাহা কাশী, কাহা কাশ্মীর, কাহ খোরাশান গুজরাত,’ আজন্ম ঘুরছি। কত পাহাড়, নদ, নদী, গিরি,নির্বার, উপত্যক, অধিত্যক, চিরনীহারমণ্ডিত মেঘমেখলিত পর্বতশিখর, উত্তস্বতরঙ্গভঙ্গকল্লোলশালী কত বারিনিধি দেখলুম, শুনলুম, ডিজুলুম, পার হলুম। কিন্তু কেরাঞ্চি ও ট্রামঘড়ঘড়ায়িত ধূলিধূসরিত কলকাতার বড় রাস্তার ধারে—কিংবা পানের পিক-বিচিত্রিত দ্যালে, টিকটিকি-ইদুর-ছুচে মুখরিত একতলা ঘরের মধ্যে দিনের বেলায় প্রদীপ জেলে—আঁাব-কাঠের তক্তায় বসে, থেলো ছকো টানতে টানতে কবি হামাচরণ হিমাচল, সমুদ্র, প্রাস্তর, মরুভূমি প্রভৃতি যে—হুবহু ছবিগুলি—চিত্রিত ক’রে বাঙালীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন, সে দিকে লক্ষ্য করাই আমাদের দুরাশা। স্যামাচরণ ছেলেবেলায় পশ্চিমে বেড়াতে গিয়েছিলেন, ১ sea-sickness—জাহাজের দুলুনিতে মাথাঘোর এবং বমনাদি হওয়া । ২ তুলসীদাসের দোহার মধ্যে এই বাক্যটি আছে। %