পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

స్క్రిస్క్రి স্বামীজীর বাণী ও রচনা গভীর নাদ ও তার সম্মিলিত ‘রুল ব্রিটানিয়া রুল দি ওয়েভস্, মহাগীতধ্বনি কর্ণকুহরে প্রবেশ করিল! চমকিয়া চাহিয়া দেখি– জাহাজ বেজায় দুলছে, আর তু ভায়া দুহাত দিয়ে মাথাটি ধ’রে অন্নপ্রাশনের অন্নের পুনরাবিষ্কারের চেষ্টায় আছেন। সেকেণ্ড ক্লাসে দুটি বাঙালী ছেলে, পড়তে যাচ্চে । তাদের অবস্থা ভায়ার চেয়েও খারাপ। একটি তো এমনি ভয় পেয়েছে যে বোধ হয়, তীরে নামতে পারলে একছুটে চোচা দেশের দিকে দৌড়য় । যাত্রীদের মধ্যে তারা দুটি আর আমরা দুজন ভারতবাসী,—আধুনিক ভারতের প্রতিনিধি। যে দুদিন জাহাজ গঙ্গার মধ্যে ছিল, তু ভায়া ‘উদ্বোধন সম্পাদকের গুপ্ত উপদেশের ফলে বর্তমান ভারত' প্রবন্ধ শীঘ্র শীঘ্ৰ শেষ করবার জন্য দিক ক’রে তুলতেন ! আজ আমিও সুযোগ পেয়ে জিজ্ঞাসা করলুম, 'ভায়, বর্তমান ভারতের অবস্থা কিরূপ ? ভায়া একবার সেকেণ্ড ক্লাসের দিকে চেয়ে, একবার নিজের দিকে চেয়ে দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে জবাব দিলেন, ‘বড়ই শোচনীয়-বেজায় গুলিয়ে যাচ্চে ? এত বড় পদ্মা ছেড়ে গঙ্গার মাহাত্ম্য হুগলি নামক ধারায় কেন বর্তমান, তার কারণ অনেকে বলেন যে, ভাগীরথী-মুখই গঙ্গার প্রধান এবং আদি জলধারা। পরে গঙ্গা পদ্মা-মুখ করে বেরিয়ে গেছেন। ঐ প্রকার টলিজ নালা’ নামক খালও আদিগঙ্গা হয়ে গঙ্গার প্রাচীন স্রোত ছিল । কবি কঙ্কণ পোতবণিক নায়ককে ঐ পথেই সিংহল দ্বীপে নিয়ে গেছেন। পূর্বে ত্ৰিবেণী পর্যন্ত বড় বড় জাহাজ অনায়াসে প্রবেশ কুরত। সপ্তগ্রাম নামক প্রাচীন বন্দর এই ত্রিবেণী ঘাটের কিঞ্চিং দূরেই সরস্বতীর উপর ছিল । অতি প্রাচীন কাল হতেই এই সপ্তগ্রাম বঙ্গদেশের বহির্বাণিজ্যের প্রধান বন্দর। ক্রমে সরস্বতীর মুখ বন্ধ হ’তে লাগলো। ১৫৩৭ খৃঃ ঐ মুখ এত বুজে এসেছে যে, পোতুগিজেরা আপনাদের জাহাজ আসবার জন্তে কতকদুর নীচে গিয়ে গঙ্গার উপর স্থান নিল । উহাই পরে বিখ্যাত হুগলি-নগর । ১৬শ শতাব্দীর প্রারম্ভ হতেই স্বদেশী বিদেশী সওদাগরেরা গঙ্গায় চড়া পড়বার ভয়ে ব্যাকুল ; কিন্তু হ’লে কি হবে ; মানুষের বিদ্যাবুদ্ধি আজও বড় একটা কিছু ক'রে উঠতে পারেনি। মা গঙ্গা ক্রমশই বুজে আসছেন। ১৬৬৬