পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* 3 স্বামীজীর বাণী ও রচনা ময়দানি জঙ্গের সময়, তোপ বন্দুক থেকে উভয় পক্ষের উপর যে মুষলধার। গোলাগুলি সম্পাত হয়, তার এক হিসসে যদি লক্ষ্যে লাগে তো উভয় পক্ষের ফৌজ ম'রে দু মিনিটে ধুন হয়ে যায়। সেই প্রকার, দরিয়াই জঙ্গের জাহাজের গোলা, যদি ৫০ ০ আওয়াজের একটা লাগত তো উভয় পক্ষের জাহাজের নাম নিশানাও থাকত না । আশ্চর্য এই যে, যত তোপ বন্দুক উৎকৰ্ষ লাভ করছে, বন্দুকের যত ওজন হালকা হচ্চে, যত নালের কিরকিরার পরিপাটি হচ্চে, যত পাল্লা বেড়ে যাচ্চে, যত ভরবার ঠাসবার কলকক্ত হচ্চে, যত তাড়াতাড়ি আওয়াজ হচ্চে, ততই যেন গুলি ব্যর্থ হচ্চে ! পুরানো ঢঙের পাচ হাত লম্বা তোড়াদার জজেল, যাকে দোঠেঙ্গে কাঠের উপর রেখে, তাগ করতে হয়, এবং ফু ফা দিয়ে আগুন দিতে হয়, তাই-সহায় বারাখজাই, আফ্রিদ আদমী অব্যর্থসন্ধান—আর আধুনিক স্বশিক্ষিত ফৌজ, নানা কল-কারখানাবিশিষ্ট বন্দুক হাতে, মিনিটে ১৫০ আওয়াজ ক’রে খালি হাওয়া গরম করে ! অল্প স্বল্প কলকব্জা ভাল । মেলা কলকজা মানুষের বুদ্ধিমুদ্ধি লোপাপত্তি ক’রে জড়পিও তৈয়ার করে। কারখানায় লোকগুলো দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, বছরের পর বছর, সেই একেঘেয়ে কাজই কচ্চে—এক এক দলে এক একটা জিনিসের এক এক টুকরোই গড়ছে। পিনের মাথাই গড়ছে, সুতোর জোড়াই দিচ্চে, তাতের সঙ্গে এগু পেছুই কচ্চে—আজন্ম । ফল, ঐ কাজটিও খোয়ানো, আর তার মরণ-–খেতেই পায় না । জড়ের মতো একঘেয়ে কাজ করতে করতে জড়বং হয়ে যায়। স্কুলমাস্টারি, কেরানিগিরি করে ঐ জন্যই হস্তিমুর্থ জড়পিণ্ড তৈয়ার হয় ! বাণিজ্য-যাত্রী জাহাজের গড়ন অন্য ঢঙের। যদিও কোন কোন বাণিজ্যজাহাজ এমন ঢঙে তৈয়ার যে, লড়ায়ের সময় অত্যন্ন আয়াসেই দু চারটা তোপ বসিয়ে অন্যান্য নিরস্ত্র পণ্যপোতকে তাড়াহুড়ে দিতে পারে এবং তজ্জন্য ভিন্ন ভিন্ন সরকার হতে সাহায্য পায় ; তথাপি সাধারণতঃ সমস্তগুলিই যুদ্ধপোত হ’তে অনেক তফাৎ। এ সকল জাহাজ প্রায়ই এখন বাষ্পপোত এবং প্রায় এত বৃহৎ ও এত দাম লাগে যে, কোম্পানি ভিন্ন একলার জাহাজ নাই বললেই হয়। আমাদের দেশের ও ইউরোপের বাণিজ্যে পি. এণ্ড ও কোম্পানি সকলের অপেক্ষ প্রাচীন ও ধনী ; তারপর, বি আই এস্ এন কোম্পানি ;