পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

** স্বামীজীর বাণী ও রচনা কতকগুলি অমূল্য রত্বের অঙ্গুরীয়ক আছে, তোমাদের পূতিগন্ধ শরীরের আলিঙ্গনে পূর্বকালের অনেকগুলি রত্নপোটকা রক্ষিত রয়েছে। এতদিন দেবার সুবিধা হয় নাই। এখন ইংরেজ রাজ্যে—অবাধ বিদ্যাচর্চার দিনে উত্তরাধিকারীদের দাও, যত শীঘ্র পার দাও । তোমরা শূন্তে বিলীন হও, আর নূতন ভারত বেরুক । বেরুক লাঙল ধ’রে, চাষার কুটির ভেদ ক’রে, জেলে মালা মুচি মেথরের ঝুপড়ির মধ্য হতে। বেরুক মুদির দোকান থেকে, তুণাওয়ালার উকুনের পাশ থেকে। বেরুক কারখানা থেকে, হাট থেকে, বাজার থেকে। বেরুক ঝোড় জঙ্গল পাহাড় পর্বত থেকে । এরা সহস্ৰ সহস্ৰ বৎসর অত্যাচার সয়েছে, নীরবে সয়েছে,—তাতে পেয়েছে অপূর্ব সহিষ্ণুতা। সনাতন দুঃখ ভোগ করেছে,—তাতে পেয়েছে অটল জীবনীশক্তি। এরা এক মুঠো ছাতু খেয়ে দুনিয়া উলটে দিতে পারবে ; আধখানা রুটি পেলে ত্ৰৈলোক্যে এদের তেজ ধরবে না ; এরা রক্তবীজের প্রাণ-সম্পন্ন। আর পেয়েছে অদ্ভূত সদাচারবল, যা ত্ৰৈলোক্যে নাই। এত শাস্তি, এত প্রতি, এত ভালবাসা, এত মুখটি চুপ ক’রে দিনরাত খাটা এবং কার্যকালে সিংহের বিক্ৰম! অতীতের কঙ্কালচয় । এই সামনে তোমার উত্তরাধিকারী ভবিষ্যৎ ভারত। ঐ তোমার রত্নপোটকা, তোমার মানিকের আংটি—ফেলে দাও এদের মধ্যে, যত শীঘ্র পার ফেলে দাও ; আর তুমি যাও হাওয়ায় বিলীন হয়ে, অদৃশ্য হয়ে যাও, কেবল কান খাড়া রেখে ; তোমার যাই বিলীন হওয়া, অমনি শুনবে কোটি জীমূতস্তন্দী ত্ৰৈলোক্যকম্পনকারী ভবিয়ং ভারতের উদ্বোধন-ধ্বনি— ‘ওয়াহ গুরু কি ফতে’ । জাহাজ বঙ্গোপসাগরে যাচ্চে। এ সমুদ্র নাকি বড়ই গভীর। যেটুকু অল্প জল ছিল, সেটুকু মা গঙ্গা হিমালয় গুড়িয়ে পশ্চিম ধুয়ে এনে, বুজিয়ে জমি ক’রে নিয়েছেন । সে জমি আমাদের বাঙলা দেশ । বাঙলা দেশ আর বড় এগুচ্চেন না, ঐ সোদরবন পর্যস্ত। কেউ বলেন, সোদরবন পূর্বে গ্রাম-নগরময় ছিল, উচ্চ ছিল। অনেকে এখন ও-কথা মানতে চায় না। যা হোক ঐ সেঁদেরবনের মধ্যে আর বঙ্গোপসাগরের উত্তরভাগে অনেক কারখানা ১ গুরুজীর জয়, গুরুই ধষ্ঠ হউন, গুরুই জয়যুক্ত হউন। উহা পাঞ্জাব প্রদেশের শিখ সম্প্রদায়ের উৎসাহবাক্য এবং রণসঙ্কেত । . X.