পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o করিল। ইহাতে নব্যাতন্ত্রের মধ্যে বিস্তর মতভেদ ও গোলযোগ উপস্থিত হইল। প্রাচীন ধৰ্ম্মের জীর্ণস্তুপের আশে পাশে যে সকল ব্যক্তি সন্দেহ-দোলায়িত চিত্তে অজ্ঞেয়বাদের অন্ধকারে ঘুরপাক খাইতেছিলেন। ও কোন বিষয়ে স্থিরনিশ্চয়ে অসমর্থ হহঁয়া অন্তরে অন্তরে ঘোর শাস্ত্ৰ বিদ্বেষী হইয়া দাড়াইতেছিলেন, তঁাহারা দেখিলেন সাম্যমন্ত্রবাদী খ্ৰীষ্টান ও ব্ৰাহ্মরাও দোষলেশশূন্য পূর্ণমানব নহেন। তখন ধীরে ধীরে লোকের মনের গতি বিপরীত দিকে ফিরিল। কিন্তু তথাপি ঈশ্বর আছেন কি না বা হিন্দুধৰ্ম্মোক্ত সকল কথাই বিশ্বাসযোগ্য কি না-এ সম্বন্ধে তঁহাদের সন্দেহ ঘুচিল না। এমন কি পণ্ডিতপ্রবর ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর মহাশয় পৰ্য্যন্ত নাকি বলিয়াছিলেন ও সব কিছু বুঝি না।” কিন্তু ইতিমধ্যে আর একদল থিয়োসফিষ্টদের ভাব লইয়া বৈজ্ঞানিক ধরণে হিন্দুধৰ্ম্মের নবব্যাখ্যা আরম্ভ করিলেন এবং সাহেবদিগের টীকা টপ্পানীর সাহায্যে গীতা প্রভৃতি প্ৰধান প্ৰধান হিন্দু ধৰ্ম্মগ্রন্থ বুঝিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। দু’। একজন টোলের পণ্ডিতও বিজাতীয় সাহায্য ব্যতিরেকে এই পন্থী অবলম্বন করিলেন । ইহা ভাল কি মন্দ সে কথায় প্রয়োজন নাই, তবে ইহা দ্বারা এইটুকু প্রমাণিত হয় যে, কতিপয় বুদ্ধিমান ব্যক্তি সনাতন ধৰ্ম্মের মধ্যে কোন সত্য আছে কিনা তাহারই নির্ণয়ে সযত্ন হইয়াছিলেন। ইহাতে পুরাতন গ্ৰন্থাদির কতক গ্ৰহণ করিয়া ও কতক প্রক্ষিপ্তবোধে বাদ দিয়া একটা সামঞ্জস্য বিধানের চেষ্টা চলিতে লাগিল। বঙ্কিমবাবু, শশধর তর্কচূড়ামণি প্রভৃতি মনীষিবৃন্দকে এই বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা প্ৰণালীর প্রবর্তক বলা যাইতে পারে। ইতিমধ্যে বাঙ্গালার এক নিভৃত পল্লীর দরিদ্র ব্ৰাহ্মণগৃহে হিন্দুধৰ্ম্মের পুনর্যুদয়ের জন্য এক মহাত্মা আবিভূতি হইয়াছিলেন। এই ঐশীশক্তিসম্পন্ন, ধৰ্ম্ম ও সত্যের মূৰ্ত্তিমান বিগ্রহ, অতিলৌকিক দেবমানবের কথা আর কি বলিব ? ইনি বর্তমান কালের ধৰ্ম্মবিপ্লব