পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& কারণ প্রধানতঃ বিবেকানন্দ স্বামীর মধ্য দিয়াই শ্ৰীরামকৃষ্ণদেবের ভাবসমূহ জগতে প্ৰকাশিত হইয়াছে। পরমহংসদেবের মাহাত্ম্য সম্যক হৃদয়ঙ্গম করিতে হইলে তঁাহার জীবন হইতে বিবেকানন্দকে বাদ দেওয়া চলে না । বিবেকানন্দ স্বামীর ন্যায় সৰ্ব্বগুণসম্পন্ন অলোকসামান্য পুরুষ জগতে অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করিয়াছেন। প্রাচীন কালের জুলিয়াস সীজার, আলেকজাণ্ডার দি গ্রেট ও ইদানীন্তন কালের মহাবীর নাপলেয় প্রভৃতি ২৪টা মহাগুণসম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতীত তঁহার ন্যায় সৰ্ব্ববিষয়ে শক্তিশালী পুরুষ বোধ হয় ঐতিহাসিক যুগের মধ্যে দেখিতে পাওয়া যায় না। সঙ্গীত, শিল্পকলা, পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস, সাহিত্য, বিজ্ঞান, গণিত, দর্শন, জ্যোতিষ, ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ সৰ্ববিষয়ে অগ্রগণ্য-এমন তীক্ষ্মবুদ্ধি, বাগ্মী, মেধাবী, কৰ্ম্মকুশল, ক্রীড়াকৌতুক-রহস্তনিপুণ, অমল-চরিত্র, আবাল্য-ব্রহ্মচৰ্য্যপরায়ণ লোকশিক্ষক বোধ হয় জগতে কখনও জন্মিয়াছেন কি না সন্দেহ । সকল দিকৃ হইতে এমন সুপাত্র সচরাচর দেখিতে পাওয়া যায় না। অনেকের সেই জন্য ধারণা আছে বুঝি শ্ৰীরামকৃষ্ণদেবের এত নাম শুধু তঁহারই জন্য, তঁাহার মত শিষ্য লাভ করিয়াই শ্ৰীরামকৃষ্ণের মাহাত্ম্য এতদূর প্রচারিত হইয়া পড়িয়াছে। এরূপ বলিবার কারণ এই যে শ্ৰীরামকৃষ্ণদেবকে র্যাহারা দেখেন নাই তাহারা অনেকেই প্রথমে স্বামীজির আকর্ষণেই । আকৃষ্ট হইয়া শেষে তাহার গুরুর সম্বন্ধে জানিবার জন্য ব্যগ্ৰী হইয়াছেন । হইতে পারে স্বামিজীর ন্যায় অদ্ভুত মনস্বী শিষ্য না থাকিলে হয়ত পরমহংসদেবের নাম এত দিনে বিস্মৃতি-সাগরে লীন হইয়া যাইত। কিন্তু যদি কেহ মনে করিয়া থাকেন যে শিষ্যের শক্তিতেই গুরুর এত মহত্ত্ব তবে তঁহাদের মত ভ্ৰান্ত আর কেহ নাই । শ্ৰীরামকৃষ্ণদেবের কৃপালাভ না হইলে স্বামিজীর ন্যায় গুণবান। পুরুষ আর যাহাই হউন, যাহা হইয়াছিলেন। তাহা কখনই হইতে পারিতেন না। শ্ৰীরামকৃষ্ণদেবই নরেন্দ্রনাথ দত্তকে