পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৩ ] বিবেকানন্দ স্বামীতে পরিণত করিয়াছিলেন। স্বামীজি নিজে এ সম্বন্ধে বলিয়াছেন যে ‘পরমহংসদেব ইচ্ছা করিলে লাখো বিবেকানন্দ তৈরী করিতে পারেন।” কারিগর ওস্তাদ, উপাদানও উত্তম, তাই জিনিষটি এত নয়নাভিরাম ও সর্বাঙ্গসুন্দর হইয়াছিল। কিন্তু বিবেকানন্দ না থাকিলে যেমন শ্ৰীরামকৃষ্ণ দেবের মাহাত্ম্য এত প্রচারিত হইত কি না যাহারা সন্দেহ করেন, অপর পক্ষে তঁাহাদিগকে ইহাও বুঝিতে হইবে যে শ্ৰীরামকৃষ্ণদেব না থাকিলে বিবেকানন্দও এরূপ বিশ্ববিখ্যাক্ত হইতেন কি না সন্দেহ । দুইটি জীবন পরস্পর সাপেক্ষ,—উভয়কে একত্রে দেখিতে হইবে, নতুবা এ রহস্তের মৰ্ম্ম কেহ বুঝিবেন না । গুরুরূপী, সাধনা ও চরিত্রবলে সত্যের সন্ধান পাইয়া স্বামীজি দেশকে বিপথ হইতে প্ৰকৃত পথের দিকে লইয়া যাইবার সঙ্কল্প করিলেন। কিন্তু পূৰ্ব পূর্ব সংস্কারকের ন্যায় করাল ফুঠার হস্তে প্ৰাচীন সমাজের মূলোচ্ছেদ করা তাহার আদৌ অভিপ্ৰায় ছিল না । তিনি জ্ঞানালোক বিস্তার দ্বারা স্বতঃসঞ্জাত সংস্কারের পক্ষপাতী ছিলেন এবং এই সংস্কার সম্পাদনের জন্য আপন উন্নত ও উদার হৃদয়ের প্রেরণায় স্বীয় মুক্তি অগ্ৰাহা করিয়া অদ্ভুত ত্যাগের আদর্শ শীর্ষে বহন পূর্বক হিমালয় হইতে কুমারিকা পৰ্য্যন্ত ভারতের সর্বত্র ভ্ৰমণ করিলেন। তন্দ্বারা তাহার এই অভিজ্ঞতা জন্মিল যে, এদেশের প্রধান অভাব দারিদ্র্য। এই দারিদ্র্য দূর করিতে না পারিলে ধৰ্ম্ম-কৰ্ম্ম সংস্কার কিছুই হইবে না। কিন্তু তিনি বুঝিলেন রাজনৈতিক আন্দোলন বা শাসক সম্প্রদায়ের উপর দোষারোপ করিলেই এই দারিদ্র্য দূর হইবে না। ইহার জন্য দেশের লোককে স্বাবলম্বনপর করা প্রয়োজন। তিনি বুঝিলেন যে এ দেশের লোকের শতাব্দীব্যাপী মানসিক ও নৈতিক জড়তা দূর করিতে হইলে ইউরোপ ও আমেরিকার কৰ্ম্মশীল জাতিদিগের সাহায্য গ্ৰহণ করা আবশ্যক । কিন্তু ভিক্ষুকের ন্যায় হস্ত প্রসারণ করিলে ভিক্ষা ত কেহ দিবেই না, পরন্তু লাঞ্ছ",