পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিতামাতার নিকট শিক্ষা ৫৩ ৷ রায়পুরে স্কুল ছিল না, সুতরাং নরেন্দ্র অধিকাংশকাল পিতৃসন্নিধানে অবস্থান করিতেন। তাহার ফলে তিনি প্রত্যহ বিবিধ নূতন শিক্ষালাভ ও জ্ঞানসঞ্চয় করিতেছিলেন। এ শিক্ষা বিদ্যালয়ের মামুলী শিক্ষা নহে। পূর্বেই বলিয়াছি বিশ্বনাথবাবু কিরূপ সযত্নে পুত্রের মনোবিকাশ সম্পাদনে প্ৰয়াসী হইয়াছিলেন। প্ৰচলিত প্রথামত পুস্তক কণ্ঠস্থ ব্যাপারে - পুত্রকে নিযুক্ত না করিয়া তিনি তাহার সহিত চিন্তার আদান প্ৰদান দ্বারা উচ্চভাবের বীজ বপন করিতে সচেষ্ট হইয়াছিলেন। ইহার জন্য অনেক সময় পিতাপুত্রে ঘোর তর্কযুদ্ধ বাধিয়া যাইত এবং ফলে কখনও পিতা কখনও বা পুত্র জয়লাভ করিতেন। নরেন্দ্র-জননী পুত্রের বিজয়লাভেই সমধিক আনন্দিত হহঁতেন । ইহা ছাড়া বিশ্বনাথবাবুর বাসায় অনেক বিদ্বান ও পণ্ডিত ব্যক্তির সমাগম হইত। ইহাদের মধ্যে যে সকল বিষয় ? আলোচিত হইত, নরেন্দ্র তাহা স্থির হইয়া শ্রবণ করিতেন এবং মধ্যে মধ্যে তৎসম্বন্ধে নিজের স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করিতেন। বয়োবৃদ্ধগণ র্তাহার বুদ্ধিমত্তা দর্শনে অনেক সময়ে তাহাকে । আপনাদের সমকক্ষ বলিয়া বিবেচনা করিতেন এবং তাহার সহিত তদনুরূপ ব্যবহার করিতেন। বঙ্গসাহিত্যে সুপরিচিত এইরূপ একজন পিতৃবন্ধুর সহিত কথা বলিতে বৰ্লিঙ্কৈ এরুদিন নরেন্দ্রনাথ তাহাকে খ্যাতনামা গ্রন্থকারগণের গ্ৰস্থ হহঁতে ও পদ্যাংশ আবৃত্তি করিয়া এরূপ স্তম্ভিত করিয়া দিয়াছিলেন যে, তিনি বলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন “বালক, একদিন না একদিন তোমার নাম আমরা শুনিতে পাইব ।” র্যাহারা পরবর্তী কালে স্বামীজির বঙ্গসাহিত্য-রচনায় দক্ষতা দেখিয়াছেন তাহারা জানেন ঐ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রাচীন সাহিত্যিকের ভবিষ্যদবাণী কিরূপ সার্থক