পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী SV» তিনি কিছু মিথ্যে বলেন নি, আমার পক্ষে এ ঢঙই বটে, তবু খোটা সইতে পাবুলুম না, জবাব দিয়ে বসূলুম, “নুতন হবে কেন মা, তোমাদের সময়ে কি এ রীতির চলন ছিল না ? ঠাকুরদের খাবার আগেই কি খেতে ?” “তবু ভালো, ঘনশ্যামের এতদিনে কপাল ফিরুল” ব’লে শাশুড়ী মুখখানা বিকৃত করে রান্নাঘরে গিয়ে দুকূলেন। মেজ-জায়ের গলা কা৭ে গেল। তিনি আমাকৈ শুনিয়েই বললেন, “তখনি ত বলেছিলুম মা ! বুড়ো শালিক পোষ মানবে না।” রাগ করে ঘরে এসে শুয়ে পড়লুম বটে, কিন্তু এইবার সমস্ত জিনিসটা মনে মনে আলোচনা ক’রে লজ্জায় যেন মাথা কাটা যেতে লাগিল । কেবলই মনে হ’তে লাগল, তার খাওয়া হয় নি বলে খাইনি, তার কথা । নিয়ে ঝগড়া করেছি, ফিরে এসে, এ সব যদি তার কাণে যায় ? ছিঃ ছিা! কি ভাববেন তিনি ! আমার এতদিনের আচরণের সঙ্গে এ ব্যবহার এমনি বিসদৃশ, খাপছাড়া যে, নিজের লজ্জাতেই নিজে মারে যেতে লাগলুম। কিন্তু বঁাচুলুম, ফিরে এলে এ কথা কেউ তঁাকে শোনালে না। সত্যিই বঁাচুলুম, এর এক বিন্দু মিছে নয়। কিন্তু আচ্ছ-একটা কথা যদি বলি, তোমরা বিশ্বাস কবৃতে পাবুবে কি ? যদি বলি, সে রাত্রে পরিশ্রান্ত স্বামী শয্যার উপর ঘুমিয়ে রইলেন, আর নীচে যতক্ষণ স্থা আমার ঘুম এল, ততক্ষণ ফিরে ফিরে কেবলই সাধ হ’তে লাগল, কেউ যদি কথাটা ওঁর কাণে তুলে দিত, অভুক্ত স্বামীকে ফেলে। আজ আমি কিছুতে খাইনি, এই নিয়ে ঝগড়া করেছি, তবু মুখ বুজে। এ অন্যায় সহ্য করিনি-কথাটা তোমাদের বিশ্বাস হবে কি ? না হ’লে তোমাদের দোষ দেব না, হ’লে বহু ভাগ্য বলে মানব। আজ আমার স্বামীর বড় ত ব্ৰহ্মাণ্ডে আর কিছুই নেই, তার নাম নিয়ে বলুচি, মানুষের মন-পদার্থটিার