পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्षी 8S কমে যাবে। পাশের কুলুঙ্গিতে তার খানকয়েক বড় আদরের বই ছিল, তঁার দেখাদেখি আমিও মাঝে মাঝে পড়তুম। লেখাগুলো যে আমি সত্যি ব’লে বিশ্বাস কবুতুম, তা নয়, তবুও এমন কত দিন হয়েছে, কখন পড়ায় মন লেগে গেছে, কখন বেলা ব’য়ে গেছে, কখন দুফোটা চোখের জল গড়িয়ে গালের উপর শুকিয়ে আছে, কিছুই ঠাওর পাইনি। কত দিন হিংসে পৰ্য্যন্ত হয়েছে, তঁর মত আমিও যদি এগুলি সমস্ত সত্যি বলেই ভাবতে পাবৃতুম ! কিছু দিন প্লেকে আমি বেশ টের পেতুম, কি একটা ব্যথা যেন প্ৰতিদিনই আমার বুকের মধ্যে জমা হয়ে উঠুছিল। কিন্তু, কেন কিসের জন্যে, তা’ কিছুতে হাতড়ে পেতুম না। শুধু মনে হ’ত, আমার যেন কেউ কোথাও নেই। ভাব তুম, মায়ের জন্তেই বুঝি ভেতরে ভেতরে মন কেমন করে, তাই কত দিন ঠিক করেচি, কালই পাঠিয়ে দিতে বোলুব, কিন্তু যাই মনে হ’ত, এই ঘরটি ছেড়ে আর কোথাও যাচ্চি, অমনি সমস্ত সঙ্কল্প কোথায় যে ভেসে যেত, তাকে মুখ ফুটে বলাও হ’ত না। মনে কবুলুম, যাই, কুলুঙ্গি থেকে বইখানা এনে একটু পড়ি। আজ-- কাল এই বইখানি হয়েছিল আমার অনেক দুঃখের সাস্তুনা । কিন্তু উঠতে গিয়ে হঠাৎ আঁচলে একটা টান পড়তেই ফিরে চেয়ে নিজের চক্ষুকে যেন বিশ্বাস হ’ল না। দেখি, আমার আঁচল ধ’রে জানালার বাইরে দাড়িয়ে নরেন। একটু হলেই চেচিয়ে ফেলেছিলুম। আর কি ! সে কখন এসেচে, কতক্ষণ এ ভাবে দাড়িয়ে আছে, কিছুই জানতে পারিনি। কিন্তু কি ক’রে যে সেদিন আপনাকে সামলে ফেলেছিলুমু, আমি আজও ভেবে পাইনে। ফিরে দাড়িয়ে জিজ্ঞাসা কবুলুম, “এখানে এসেচ কেন ? শীকার কয়তে ?” VA নরেন বলুলৈ, “বোস, বলুচি।” আমি জানালার ওপর বসে পড়ে বলুলুম, “শীকার কবৃতে যাওনি কেন?”