পাতা:স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান - সুন্দরীমোহন দাস.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8○ সাধারণ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান । কারণ আমার গো-বসন্ত হইয়াছিল।” চিকিৎসকের সহকারী এডওয়াড জেনার নিকটে দাড়াইয়াছিলেন। যুবতীর কথাটী তাহার অন্তস্তলে প্রবেশ করিল। তিনি যখন স্বয়ং চিকিৎসা কাৰ্য্যে ব্ৰতী হইলেন, ঐ বিষয়ে অন্তরে ও বন্ধুদের সঙ্গে ক্ৰমাগত আন্দোলন করিতে লাগিলেন, এবং অবশেষে গোশালায় প্রবেশ করিয়া গভীর গবেষণায় প্রবৃত্ত হইলেন। একটা গ্ৰাম্য যুবতীর গল্পচ্ছলে কথিত যে বাক্যটা জেনারের অন্তরে নূতন আলোক প্রকাশ করিয়া- } ছিল, সেই বাক্যের সমর্থনা করিয়া ৩০ বৎসর পরে তিনি গো-বসন্ত সম্বন্ধে একখানা পুস্তক প্রণয়ন করেন । তদবধি বৈজ্ঞানিক জগতে এক যুগান্তর উপস্থিত হইল। ইতিপূর্বে আমাদের দেশে ধন্বন্তরি। তাহার শাক্তেয় গ্রন্থে গোবীিজের টীকার উল্লেখ করিয়াছেন ; কিন্তু ঐ টীকা প্রচলনের কোন বিশেষ বিবরণ পাওয়া যায় না। ১৮০২ সালে লর্ড ক্লাইভের উদ্যোগে ভারতবর্ষে প্রথম গোবীিজের টীকা প্ৰচলিত হয়। বঙ্গদেশে ১৮০৩ সালে ইহার সুচনা। ইহার ৩ বৎসর পর কলিকাতাবাসীগণ ডাক্তার জেনারকে কৃতজ্ঞতার নিদৰ্শনস্বরূপ ৪০ ০০ পাউণ্ড প্রেরণ করেন । বোম্বাই ও মান্দ্ৰাজ হইতেও প্ৰায় ৩৪০০ পাউণ্ড প্রেরিত হয়। প্রথমতঃ টীকান্দারেরা নানাপ্রকার প্রতিবন্ধক জন্মাইবার চেষ্টা করে, কিন্তু অবশেষে কলিকাতা নেটিভ হাসপাতালের সার্জন সুলব্রেডের প্ররোচনায় তাহারা ইংরাজী টীকার ইতিহাস । ভ্যাকসিনেশনের পক্ষ অবলম্বন করিয়া সরকারী পত্রে নাম স্বাক্ষর করে। সেই বৎসর মাকু ইস অব ওয়েলেসলী এই বিধান করেন যে বাঙ্গালী টীকা দিতে হইলে কলিকাতা পরিত্যাগ করিয়া বাহিরে দুই মাস কাল থাকিতে হইবে । কিন্তু এই আইন কেবল পুলিশ-প্রচারিত বলিয়া অল্পকাল পরেই অগ্ৰাহা হইয়া যায়। বহুকাল পৰ্য্যন্ত ইংরাজী টীকা সম্বন্ধে নানা প্রকার আপত্তি উত্থাপিত হইতে থাকে। অবশেষে চিরস্মরণীয় মহাত্মা ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগরের প্রযত্নে নবদ্বীপা - ধিপতি মহারাজা শ্ৰীশচন্দ্র কত্ত্বক একটী পণ্ডিত-সভা আহত হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তর্কে পরাভূত হইয়া পণ্ডিতেরা ইংরাজী টীকার স্বপক্ষে ব্যবস্থা পত্রে নাম স্বাক্ষর করেন । তথাচ ভ্যাকসিনেশন সম্যকরূপে প্রচলিত হয় নাই। ১৮৬৫ সালে সুপ্ৰসিদ্ধ অধ্যাপক চালাসের উদ্যোগে ইনকিউলেশন