পাতা:স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান - সুন্দরীমোহন দাস.djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ο স্বাস্থ্যবিজ্ঞান | সকলে চারিদিকে পলায়ন করিতে লাগিল । পলাতকাদিগের মধ্যে এক ব্যক্তি বিষণা নামক নদীর তীরবর্তী এক গ্রামে ওলাউঠায় আক্ৰান্ত হইল । সেই সময়ে বিষণা নদী স্রোতবিহীন, শৈবালপুর্ণ এবং স্থানে স্থানে আবদ্ধ । গ্রামের সমুদয় মলমূত্রবাহিনী নালা ঐ নদীতে প্রবাহিত হইত। গ্রামবাসিগণ নদীর তীরে মলমূত্র ত্যাগ করিত এবং জলে গো মহিষাদির সঙ্গে স্নান কিরিত । সে গ্রামে এই জল ভিন্ন অন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা ছিল না । এই স্থান হইতে ওলাউঠা, চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হুইয়া যখন ভীষণ আকার ধারণ করিল, আমি ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক কারণ অনুসন্ধানে নিযুক্ত হইলাম । আমি স্পষ্টরূপে এই প্রমাণ করিয়াছিলাম যে ওলাউঠা বিষণা নদীর দুই পার্শ্বে গ্রাম হইতে গ্রামান্তরে উত্তরাভিমুখে অগ্রসর হইয়া এবং অন্য একটি নদীর তিরোবৰ্ত্তী গ্রাম পৰ্য্যন্ত উত্তীর্ণ হইয়া তিরোহিত হইয়াছিল। সেই নদী প্রশস্ত ও বিশুদ্ধ ছিল । ১৮৯১ সালের অৰ্দ্ধোদয় যোগে ১৫০০ ০০ দেড় লক্ষাধিক যাত্রী কালীঘাটে গঙ্গাস্নানার্থ সমবেত হইয়াছিল । গঙ্গার তীরবত্তী শ্বেতখানা হইতে প্রবাহিত এবং অসংখ্য নৌকারোহীদের পরিত্যক্ত মল জলে মিশ্রিত হইয়া ইহার য়্যালবুমিনয়েড, য়্যামোনিয়ার দ্বিগুণ বৃদ্ধি করিয়াছিল। এই জলে একটী ওলাউঠা রোগীর শব্ব নিক্ষিপ্ত হয়। এই জলে স্নান ও এই জল পান করিবার জন্য যাত্রীদের বিশেষ আগ্ৰহ । এই আগ্রহের বিষময় ফল কলিকাতাবাসী দিগকে তিনমাসকাল পৰ্য্যন্ত ভোগ করিতে হইয়াছিল। তিন মাসে ১৩৬৩জন ওলাউঠা রোগে প্রাণত্যাগ করে, তন্মধ্যে ৬২৮ জন অৰ্দ্ধোদয়যোগের যাত্রী। ডাক্তার সিমসন বলেন,কালীঘাটবাসী প্ৰায় সকলেই কলের জল পান করিত ; তাহাদের মধ্যে অতি অল্প লোকেরই ওলাউঠা হইয়াছিল ; কিন্তু বহুসংখ্যক বিশুদ্ধ জলপায়ী পুলিস ইনস্পেষ্টর, মিউনিসিপালিটীর ইনস্পেষ্টর ও কুলী, যাত্রীদের পরিচর্য্যায় নিযুক্ত হইয়াও ওলাউঠাক্রান্ত হয় নাই ; এই কারণে টলী নালার দূষিত জলই রোগ প্রকোপের প্রধান কারণ বলিয়া প্রতীত হয় । ( ডাক্তার সিমসনের "তীর্থযাত্রী ও কলেরা,” ৬ পৃষ্ঠা ) দুষিত জল হইতে ওলাউঠার বিস্তৃতি সম্বন্ধে এইরূপ অনেক দৃষ্টান্তের উল্লেখ করিতে পারা যায়। কলিকাতায় যে অংশে এখনও পুষ্করিণী বিদ্যমান