পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুৰ্বাঘাসের মাঠ, ধুতুরা ফুলের ঝোপ, উলুখড়ের ঝোপ, বড় পাকুড গাছটার তলায় হলুদ-রাঙা, জারদা রং এর সন্ধ্যামনি ফুলের বন, এদিকে ওদিকে পাখী ডাকছে, ক্ষেতে গরু চরছে।--বাধের নীচে জলের ধারে বকের দল বসে আছে, স্নিগ্ধ খোলা মাঠের সান্ধা বায়ু-মনটা যেন এই অপূৰ্ব্ব সীমাহীনতার মধ্যে, দূরপ্রসারী শ্যামল প্রাস্তরের মধ্যে ছড়িয়ে ছড়িয়ে গেল । দূর প্রান্তে চেযে চেয়ে ভাবলাম বহুদূরের আমাদের বনজঙ্গলে ভরা অন্ধকার ভিটা, বাশবনের কথা । এই সুন্দর অপরূপ শরৎ সন্ধ্যায় গ্রামের লতাপাতা থেকে ওঠা ভরপুর কটুতিক্ত গন্ধটার কথা, সেই বঁাশঝাডে শালিপ-ডাকা বাংলাদেশের মাযা সন্ধ্যার কথা, "তরুণীরা মাটীর প্রদীপ হাতে গৃহ-আঙ্গিনাব্য তুলসীমঞ্চে সন্ধা! দেখাচ্ছে ঘরে ঘরে রাত্রির আবাহন——মঈলশঙ্খের রব । এসমযে চাপাপুকুরেব পুকুর ঘাটে, তাদের তে তলার সবটায়, চট্টগ্রামের দূর প্রান্তের সেই ঘরটাতে, বা রিদপুরেব বাড়ীটায, ঝালকাটীর মনিব বা উীতে না জানি কি হচ্ছে । মনি বড় হয়েছে।--বোধ হয বিয়েও হযে গিযে থাকবে । আমি স্বপ্ন দেখি সেই দেবতার-যিনি এই নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়, যুগন্তের পাৰ্ব্বতশিখরে নীরব চিন্তামগ্ন । কত শত জন্মের স্মৃতি, হাজার বৎসরের হাসিকান্নার কাহিনী, নিৰ্জন গ্রহের নির্জন পৰ্ব্বতে, যুগ যুগ অক্ষয় তরুণ দেবতার মনে পডে -র্ধীর, নিৰ্জন, নীরব ধ্যান শুধু অতীতের। সম্মুখে তার বিশাল অজানা বিশ্ব । দেবতা হয়েও সব জানেনি, সকলের সীমা পাযনি গ্রহে, শত প্ৰেম কাহিনীর জগলে জালে জড়ানো তরুণ সুন্দর মুক্ত তীর । নিস্তব্ধ অন্ধ্যরাতে বসে বসে শুধু সে একমনে অপরূপ জীবন রহস্য ভাবে-ভাবে চারধারে বিশ্বের আঁধার ঘিরে আসে, মাথাব ওপরে তারা ওঠে, কোন সুদূর লোকের পর থেকে অনন্ত অজানার সুরা যেন কানে বাজে-একটা ছবি মনে আসে সেটা নীচে অ্যাকলাম, ছবিটা আমার মনে আছে, কিন্তু অকাটা এখানে হবে না, কারণ আঁকিতে আমি জানিনে তবুও এইটা দেখে মনের ছবিটা মনে ফিরে আসবে । ৷৷ ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ১৯২৭ ৷৷ সকালে আজ কিরকম করে বৃষ্টিটা এল! কাটারিয়ার দিক থেকে ভয়ানক মেঘ করে এল। ঘন কালো মেঘের ব্লাশ ঘুরতে ঘুরতে ঝড়ের মুখে হু হু উড়ে Sጋኳፖ