পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করি। না-দুটো একটা Doctrine যারা বাদ দিয়েছে তাদেরও বাদ দিয়েছি। রাজা বিয়ে করতে চাইলেন (Henry VIII)-সেই জন্যে আমরা ইংলণ্ডের মত দেশকে ছোটে বাদ দিলাম। St. Lewis বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এতদূর এসেছেন, বললেন, আমরা আর দেশে ফিরবো না, মৃত্যু হয়তো এখানেই হবে। সেখান থেকে বেরিয়ে কলেজের পথে অন্ধকার ঘন আমবনটা দিয়ে রেল লাইনে এসে উঠলাম। জ্যোৎস্না উঠেছে, পাতার ফাক দিয়ে জোৎস্না পড়েছে-- এই পাশের তালতলায় গত ভাদ্র মাসে কল্পনা করেছিলাম দুৰ্ব্বার তালকুড়ানো শৈশবে তাল প’ড়ে থাকলে গাছতলায় কিরকম আনন্দ হোত । কি অপূর্ব আম-বউলের গন্ধ মাখা জ্যোৎস্না রাত্রিটা ! সঁাকোটার উপর অনেকক্ষণ ব’সে গল্প ক’রে ষ্টেশনে এলাম । কবিরাজ মহাশয়ের সঙ্গে অনেককাল পরে দেখা-তিনি সংকীৰ্ত্তন করতে যাচ্ছেন ষ্টেশনের বাসায় । বাজারে একটা সার্ট কিনে গ্রামোফোনের দোকানে রবি ঠাকুরের আবৃত্তি শুনলাম-আজি হ’তে শতবর্ষ পরে। বৃদ্ধ কবিবরের গম্ভীর গলায় উদাত্ত সুর বড় ভাল লাগল। তারপরে চণ্ডীবাবু চ’লে গেল তার বাড়ী, আমি আসতে আসতে পথে ভোলাবাবুর সঙ্গে দেখা । ভোলাবাবু দীপবাবুর (VTN TT (biza Electric fittings-4* Canvass করতে । তাকে বললাম, দীপবাবু এখন ব্রীজ খেলতে ব্যস্ত, সকালে না গেলে কি দেখা হবে । দিনটা বেশ কাটল । ৷৷ ২৬শে ফেব্রুয়ারী, ১৯২৮ ৷৷ সকালে নায়েবের সঙ্গে গেলাম কমলাকুণ্ড। বেশ ঘোড়া ছুটিয়ে সকালের হাওয়ায় রণচুর ক্ষেতের পাশ দিয়ে দিয়ে গেলাম। কয়েকদিনের জড়তাটা কেটে গেল। ক্ষেতে ক্ষেতে যাব পেকেছে । পাকা ফসলের সুগন্ধ চারধার থেকে পাওয়া যাচ্ছে। কখনো আমি ঘোড়া ছোটাই, কখনো নায়েব মহাশয় ঘোড়া ছোটান। ফুলকিয়ার সীমানা ছাড়িয়েই জঙ্গল থেকে একটা বুনো মহিষ বার হ’ল। সেটার মুক্তি দেখেই আমি বললাম, এটা মারতে পারে, ঘোড়া ঘোরান মশাই। খুর দিয়ে মাটি খুঁড়ে সেটা শিং নেড়ে লাল চোখে আমাদের দিকে চাইতে লাগলো। যদি তেড়ে মারতে আসে-দু’জনে ঘোড়া ফিরিয়ে চালিয়ে খানিকট এসে আবার দাড়িয়ে গেলাম। ততক্ষণ মহিযটা চ’লে গিয়েছে। তারপর আমরা ঘোড়া ফিরিয়ে কমলাক ও পৌঁছলাম। খুব রোদ চ'ড়েছে, Ds