পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানকার জলের গুণ বড় ভাল দেখছি। দুপুরবেলা কমলাকুণ্ডুর কাছারীতে বসে বসে লিখি-পর-প্রচণ্ড চৈত্র-রৌদ্র -পাশের ঘর যেন আগুনের মত দাউ দাউ জ্বলে-হু, হু পশ্চিমে হাওয়া বয়, আমার খোলা দরজার ঠিক সামনে দূরের ঐ কাচিপাতা ওঠা শিশুগাছটির দিকে ও তার পেছনকার উটের পিঠের বুজের মত ধূসর পাহাড়টার দিকে চেয়ে চেয়ে দেখি —কেবল মনে পড়ে, এই মধ্যা হ্নে বাংলাদেশের কত অজানা মাঠ--ঘেটুফলে ভরা, উলুখড়ে ভরা, কত মােটা মােটা গুলঞ্চলতা-জুলানাে, রাঙাফুলের ভর। শিমুলগাছ। এগাছের ওগাছের তলায় যেন বসলাম । অজানা গ্ৰাম্যপথে মাঠের ধারের বনে গাছপালায় স্নিগ্ধ ছায়ায় ব’সতে ব’সতে পথইট। রেলপথ থেকে বহু-বহুদূর সব গ্রাম-কত দরিদ্র পল্লীতে শান্ত নিভৃত জীবনযাত্র। কত ঘরে কত সুখ-দুঃখ-ক’ত বধু কত কন্যার শান্ত চোখ। | s>な* Nf5。>さミb | আজকার বেড়ানোটা-সবচেয়ে অপূৰ্ব্ব । কলবলিয়। পার হ’য়ে মকুন্দপুরের পথে বেড়াতে গেলাম । বেলা একেবারে গিয়েছে। বা ধারে কলবলিয়ার ওপারে সিমনিপুরের দ্বিরাতে সূৰ্য্যা অস্ত যাচ্ছে। কমলাকুণ্ড পার হ’য়েই পথের ধারে বড় বড় শিমুল পাকুড়াগাছ, ঘেটুফুলের তেতে। গন্ধ-বাশঝাড়, কোকিলের ডাক, গ্রামসীমার গাছপালায় মধ্যে পাপিয়া ডাকছে। বসন্তের দিনে বেশ লাগিল । অজানাপথে আকন্দ্যফল, কচি ওড়াফুলের মধ্যে দিয়ে ঘোড়া চালিয়ে যেতে এমন লাগছিল! যেতে যেতে একটা গ্রােম পড়লো।—লাবটুলিয়া, পরে বোচাহি । পথে কীৰ্ত্তনিয়া বুন্দাবন হোটে আসছে-বললে, নাগরা গিয়েছিল কীৰ্ত্তন করতে । আমি বললাম-রামবাবুর ওখানে ? তারপর সে চ’লে গেল। ক্রমে ডিমহী পেলাম। চৌধুরীটােলা । সেইখানটা গিয়ে পথের ডানধারে একটা সরু মাটির পথ-দু’ধারে ঘন শিশুগাছের শ্রেণী-ছায়াভিরা মাটির গন্ধ । রাস্তা ছেড়ে দিয়ে সেই পথ ধরলাম। একটু দূরে গিয়ে একটা পোড়ে। ভিটামিত—ঘটুফুলের একেবারে জঙ্গল । ঘেটুফুলের গন্ধে একেবারে ভরপুর । ওদিকে আর একটা বঁাশঝাড়, একটা পাড়া । সেইখানটা গিয়ে মনে প’ড়ল অনেকদিন আগে সেই যে গিয়েছিলাম বাগান-গায়ে রাখালী পিসিমার বাড়ী গিয়ে, ওদিকে কোদলার ধারে একটা পুরোনো ভিটাতে-সেই কথা মনে পড়ল। ঠিক যেন সেই স্থানটা -এ স্থানটা ঠিক যেন বাংলাদেশ । বিহারে এতদিন পরে বাংলার সাদৃশ্য খুঁজে እs ዓ