পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি

মাথার কাছে বসিয়া সস্নেহে মাথায় হাত বুলাইয়া দিতে লাগিলেন।

 এই দুইটি মাত্র নারীকে লইয়া ইহাদের ক্ষুদ্র সংসারটি গঠিত হইয়াছিল। অমিয়ার মা যেদিন বিপত্নীক পিতার হাতে এগারো মাসের শিশু অমিয়াকে সঁপিয়া দিয়া পরলোকের পথে যাত্রা করিলেন, সেদিন রাগে ও শোকে অকালবৃদ্ধ ত্রিপুরাচরণের এই শিশুর ভার, দুঃসহ বলিয়া অনুভূত হইয়াছিল। কিন্তু নিরানন্দ মৃত্যুপুরীর ন্যায় নির্জ্জন এই অন্ধকার-গৃহে যখন শিশু-কণ্ঠের কলহাস্য আবার জীবনের চাঞ্চল্য জাগাইয়া তুলিল, তখন বুদ্ধের জীবনসায়াহ্নটা আবার সহনীয় ও বহনীয় বলিয়া মনে হইল। এই মেয়েটিকে খেলা দেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, শিক্ষা দেওয়া, যত্ন করাই যেন তাহার জীবনের একমাত্র কার্য্য হইয়া উঠিল। ইহাকে ছাড়িয়া তিনি কোথাও যাইতে পারেন, এক মুহূর্ত্ত চোখের বাহিরে রাখিতে অন্ধকার দেখেন। মেয়েটিও তাঁহাকে সর্বান্তঃকরণে ভালবাসিত। কান্নাকাটি ছিলই না। শিশুকাল হইতে নারীহীন সংসারে পুরুষসাহচর্য্যে বর্জিত হওয়ায়, তাহার ধরণ-ধারণে বালিকাভাবের পরিবর্ত্তে বালকের ভাবই অধিক দেখা যাইত। হাঁড়িকুঁড়ি পুতুল লইয়া খেলার চেয়ে বই বগলে স্কুলে