পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
স্রোতের গতি

 অমিয়া তাহার মুগ্ধ দৃষ্টি হইতে মুখ ফিরাইয়া হাসিয়া কহিল—“কোনো কোনো জানোয়ার আছে, যাদের আস্কারা দিলে মাথায় ওঠে। ছোঁয়াচে রোগের কাছ থেকে দূরে থাকাই ভাল—তাতে আর সংক্রমণের ভয় থাকে না। বুঝ্‌লে?”

 “ভয়? বিবাহ-বিদ্বেষিণী নারী-সমিতির সহকারীসম্পাদিকা, এবং পৃষ্ঠপোষিকা—‘নারী-বিদ্রোহ’ প্রণেত্রীর ভয়? তুমি যে আমায় একেবারে অবাক করে দিলে ভাই অমিয়া! সংক্রামক বীজের শক্তি ত তবে দেখ্‌চি অসাধারণ” বলিয়া কৃত্রিম বিস্ময়ে বিস্ফারিত-চক্ষে চাহিয়া চিন্তান্বিতভাবে পুনরায় কহিল—“ঐ জন্যেই ত ডাক্তারেরা বিধান দেন—টিকে নেবে। তাতে আর ছোঁয়াচের ভয় থাকে না।” কথাশেষে গাম্ভীর্য্য ছাড়িয়া সে এবার প্রাণ খুলিয়া হাসিতে লাগিল।

 অমিয়া মুখ ফিরাইয়া কি একটা কথা বলিতে গিয়া বলিল না। আত্মসম্বরণ করিয়া মীনার সহাস্য অনুরোধে আর একটি কথা শুনিয়া যাইবার আহ্বান উপেক্ষা করিয়াই সে কেবল বিলম্ব হইয়া যাইবার হেতু দেখাইয়া তাড়াতাড়ি বাগানের পথে বাহির হইয়া পড়িল।

 মীনার তীক্ষ দৃষ্টির তলে দাঁড়াইয়া নিজেকে তাহার আজ যেন বড় দুর্ব্বল—বড় অসহায় মনে হইতেছিল। সে