পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
১০৯

তাহার চোখের তারায় বিপুল বিস্ময়ের চিহ্ন ঘন হইয়া ফুটিয়া উঠিল। অন্যমনস্কতায় তাহার জুতার শব্দ পর্য্যন্ত অনুভব করিতে না পারায়, লজ্জা ও সঙ্কোচে বিপন্ন বিব্রত ভাবে অমিয়া চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়াছিল। কৈফিয়ৎস্বরূপ সে কেবল একটুখানি ম্লানহাসি হাসিল। রণেন্দ্র কিন্তু তাহার আকস্মিক আগমনের কোন কৈফিয়ৎ চাহিল না। সঙ্কোচ কাটাইয়া অত্যন্ত সহজভাবেই সে ঘরে ঢুকিল। হাতের বই ক’খানি টেবিলের উপর রাখিয়া হাসিমুখে কহিল—“বইগুলো আজকের ডাকে এসে পৌঁছেছে। একটি বন্ধু উপহার পাঠিয়েছেন। ডাকঘরে বসেই প্যাক্ ট্যাক্‌ খুলে এদের উদ্ধার করে নিয়ে এলাম!”

 অমিয়া বই ক’খানির পানে একবার চাহিয়া দেখিল—তখনও সে আত্মস্থা হইতে না পারায়, কোন উত্তর দিল না। রণেন্দ্র তাহার সঙ্কোচ দেখিয়া নিজেই কথা কহিল— “অন্ধকারেই বুঝি পড়্‌ছিলেন? কি আশ্চর্য্য! বাতিটা জ্বেলে নেন্ নি কেন?” বলিয়া টেবিলস্থিত বাতি ও দেশালাই লইয়া সে আলো জ্বালিয়া দিয়া কহিল—“বোম্বাই থেকে এখনি টেলিগ্রাফ এল, শীঘ্রই আমায় যেতে হবে সেখানে। আপনি এখনো কিছুদিন এখানে থাক্‌চেন বোধ হয়?”