পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
স্রোতের গতি

 জীবনে স্বামীকে সে ভালবাসিতে পারে নাই। তাঁহার মৃত স্মৃতিকে পূজা করিতেও পারিল না। সত্যবতী এখন আর বালিকা নাই—তাহার জীবনের আকস্মিক পরিবর্ত্তন সুধু অবস্থায় নয়, তাহার শরীর-মনেও গভীর ছায়া ফুটাইয়া, হাত বুলাইয়া দিয়া গিয়াছিল, যৌবনেই তাহাকে প্রৌঢ়ার মত দেখাইত। বিধবার আচার সংযম সাধন সমস্তই সে খুঁটাইয়া পালন করিত। আর, বাপ ছাড়া জগতের পুরুষজাতিকে সে ঘৃণা করিত। অমিয়ার বাপের হৃদয়হীনতা তাহার এই অশ্রদ্ধার অনলে আহুতি যোগাইয়া দিল। ভগিনীপতি তাঁহার নিজের সংসারে এমনি তদগতচিত্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন যে, একদিন পত্রদ্বারাও মেয়ের একটা কুশল সংবাদ লইবার সময় করিয়া উঠিতে পারিলেন না। সত্যবতীর মনে হইল, সাধারণ পুরুষের কাছে পত্নীপ্রেম ও সন্তানবাৎসল্যের মূল্য তবে একই!

 সংসারের নানা প্রতিকূল ঘটনায় এ বিশ্বাসের ভিত্তি দৃঢ়ই হইতেছিল। বাড়ীর পাশেই এক অবিবাহিত ইংরাজ-মহিলার বাসা। জানালায় দাঁড়াইয়া সত্যবতী তাঁহার সহিত গল্প করিত। আর খ্রীষ্টীয়-সমাজে বিবাহিতা নারীমণ্ডলীর ভূরি-ভূরি দুরবস্থার কাহিনী সংগ্রহ করিয়া লইত। মাসীর শিক্ষা অনুসারে অমিয়া যদি কোনদিন