পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
স্রোতের গতি

অভাব নেই, দু-দুটো ঘড়ি আমার নিজের। টাকা দিলেই বাজার থেকে অমন কেন ওর চাইতে ঢের ভাল ভাল বই এক্ষুণি সর্দার গিয়ে কিনে এনে দেবে। বিনয় শিশির ওরা গরীবের ছেলে, বাপের জন্মে কখনো ত ঘড়ি দেখেনি —ওরাই দেখুক। ইচ্ছে কল্লে আমিই কি আর সেকেণ্ড, হ’তে পাত্তুম না? দয়া করে কেবল হইনি—তাই ওদের লম্পঝম্প!”

 এই অপরিচিত পিতা এবং ততোধিক অপরিচিত সন্তান-বাৎসল্য বালিকার স্নেহপিপাসু চিত্তে সবলে একটা বেদনার আঘাত দিয়া মুহূর্তে তাহাকে ঠেলিয়া দূরে সরাইয়া দিল। তাহার কালো চোখে জল ভরিয়া আসিয়াছিল; পাছে এ দুর্বলতাটুকু বাপের চোখে পড়ে এই ভয়ে সে আস্তে আস্তে চিরদিনের জন্যই পিতৃসান্নিধ্য ত্যাগ করিয়া চলিয়া আসিল। সারাজীবনের পিতৃয়েহের এইটুকু স্মরণচিহ্নই তাহার সম্বল। নিজের ঘরে মেঝের উপর লুটাইয়া পড়িয়া কেনই যে সে ফুলিয়া ফুলিয়া দিয়াছিল, তাহার কারণ হয় ত সে নিজেই জানিত না।

 অনেকক্ষণ কাঁদিয়া মনের ব্যথা যখন কমিয়া আসিল, সে উঠিয়া মাসীমার খোঁজে গেল। সত্যবতী তাঁহার একমাত্র স্নেহময় আশ্রয় পিতার শ্রাদ্ধকার্য্য সমাধা করিয়া,