ষ্টেশন মাষ্টার অবাক্ হইয়া তাহার পানে চাহিয়া রহিলেন। কহিলেন—“শোন কথা,—ঠিকে গাড়ী! ওগো বুঝেচি—বুঝেচি, ঠিকে গাড়ী আর বুঝি নে? সে এখানে পাবেন কোথায়? সে প্রায় দশ মাইল দূরে পাওয়া যায়।”
অমিয়া উৎকণ্ঠিতভাবে কহিল—“বয়েল-গাড়ী?”
ষ্টেশন-মাষ্টার হাতের কাগজখানি সরাইয়া রাখিয়া আর একখানি কাগজ বাছিতে বাছিতে কহিলেন—“গরুর গাড়ী—ওঃ? তা, আজ ত হাটবার নয়! আজ আর কোথায় পাবেন? সে, হাটের দিন চেষ্টা কল্লে এক আধ খানা ধর্তে পারা যায় বটে।”
“কুলী—মুটেও কি মেলে না মশাই এ দেশে?”
ক্রমেই হতাশায় তাহার গলার স্বর ভাঙ্গিয়া আসিতে ছিল। ষ্টেশন মাষ্টার মুখ তুলিয়া মেয়েটির ক্রোধ বিরক্তি ও নৈরাশ্যপূর্ণ মুখখানির পানে একবার চাহিয়া একটু নরম সুরে কহিলেন—“কুলী ষ্টেশনেরই যা একজন আছে। তা, সে ত এখন রাঁধ্তে-খেতে বাড়ী চ’লে গেল, এখুনি ত তাকে আর পাওয়া যাবে না। তার বাড়ী সেই গাঁয়ে।”
“প্রাণতোষ-বাবুর বাড়ী কোথায় জানেন? না—তাও জানেন না? বেঙ্গল টিম্বরের এজেণ্ট্ প্রাণতোষ-বাবু?”—