পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৪৩

 পরদিন সকালে যখন তাহার ঘুম ভাঙ্গিল, প্রথমেই ট্রেণের বাঁশীর সুর তাহার কাণে আসিয়া পৌঁছিল। এখান কার অদ্যকার একমাত্র ট্রেণখানি যে বাহির হইয়া গেল ইহা তাহারই সাঙ্কেতিক চিহ্ন। আজ আর কোন গাড়ী এখান হইতে রওনা হইবে না—সুতরাং ব্যস্ত হইবার প্রয়োজনও আর কিছু নাই। তখনও ভাল করিয়া চোখের ঘুম ছাড়িতে চাহিতেছিল না। ট্রেণের শব্দেও তাহার মনে কোন চাঞ্চল্য উপস্থিত হইল না—থাক্, যখন আসিয়া পড়িয়াছেই, তখন দু’এক দিন না হয় এখানেই একটু জিরাইয়া লইল!

 পাখীর গান ও তাহাদের কিচ্‌কিচ্‌-কথার সুর তাহার কাণে ভাসিয়া আসিতেছিল। বিছানায় শুইয়াই সে তাহার ক্লান্ত চোখের ঘুম ছাড়াইয়া বাহিরে চাহিয়া দেখিল। খোলা জানালা দিয়া আকাশের বর্ণ দেখা যাইতেছে। কি আশ্চর্য্য মনোমুগ্ধকর নীল রঙ। ধোঁয়া বা কুয়াশার চাদর আচ্ছাদিত কলিকাতার পাংশু আকাশ নয়। তালগাছের পাতার আড়ালের ফাঁকে ফাঁকে অগ্নিচক্রের ন্যায় রাঙা আলোর স্রোত বহাইয়া সূর্য্যদেব ধীরে ধীরে নিম্ন হইতে ঊর্দ্ধে— ক্রমে আরও ঊর্দ্ধে উঠিতেছেন—কি চমৎকার দৃশ্য! বাহিরে বাগানে অজস্র ফুল ফুটিয়া সৌন্দর্য্যে গন্ধে মন ও চক্ষু