পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
স্রোতের গতি

পরিতৃপ্ত করিয়া দিতেছিল। একটা দোয়েল এই কতক্ষণ গাছের ডালে বসিয়া শিশ্ দিতেছিল, এখনি উড়িয়া গিয়াছে।

 অমিয়াকে বিনিদ্র বুঝিয়া, ছেলে কোলে মূর্ত্তিমতী হাসির ন্যায় মীনা আসিয়া কাছে দাঁড়াইল। সকালবেলার স্নিগ্ধ রোদটুকু খোলাপথ দিয়া দুরন্ত ঘরের ছেলেটির ন্যায় ছুটাছুটি লাগাইয়া দিল। মীনার হাতে পাতাসুদ্ধ দুটি মস্তবড় হলুদ রঙের গোলাপফুল। ছেলের হাতে ফুলের গুচ্ছটি দিয়া মা হাসিমুখে কহিলেন—“খোকামণি, তোমার মাসীমাকে ফুল দাও ত ধন!” খোকা একবার অপ্রসন্ন অনিচ্ছুক দৃষ্টিতে অমিয়ার পানে চাহিয়া, মার মুখের দিকে চাহিল। ভ্রূকুঞ্চিত করিয়া ঠোঁট্ ফুলাইয়া আপত্তি জানাইল। পুনরায় মার মুখের দিকে চাহিয়া দেখিল। সেখানে সম্মতির কোন চিহ্ন না পাইয়া, ফুলগুলি অমিয়ার বিছানায় কেলিয়া দিল। সঙ্গে সঙ্গে সুগোল হাত দু’খানিও অমিয়ার দিকে বাড়াইয়া দিল। তাহার সুন্দর মুখে সকাল বেলার স্নিগ্ধ রৌদ্রের আলোর ন্যায় হাসির আলো ফুটিয়া উঠিল। অমিয়া দুই বাহু প্রসারিত করিয়া তাহাকে কোলে তুলিয়া লইল।