পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৫৫

ফিতে চাপকানের বোতাম খুল্‌ত, রাত জেগে ওঁদের আর ওঁদের ছেলেপুলেদের সেবা কর্‌তো, ওষুধ দিত, হেঁটে এলে পায়ে তেল মালিস্ কর্‌ত শুনি? সত্যি বল্‌চি মীনা, তোমাদের নিজেদের দোষেই তোমাদের এত দুর্গতি।”

 অমিয়া হঠাৎ স্বর নামাইয়া একটু হাসির সহিত কহিল―প্রাণতোষবাবুর সম্বন্ধে আমি কিছু বল্‌চি না। তাঁকে অবশ্য আমি শ্রদ্ধা করি―আমি বল্‌চি সাধারণ পুরুষসমাজকে। সহ্য ক’রে, দাসীপণা করে ওঁদের তোমরা মাথায় তুলেচ বলেই না ওঁদের এত সাহস বেড়েচে―যে যার নোড়া তারই দাঁত ভাঙ্গতে চান! মেয়েরা একবার প্রতিজ্ঞা করে সব কুমারী থাকুক্ দেখি―কেমন না ওঁদের বিষদাত ভাঙ্গে? দিনকতক নিজে নিজে চালান না সংসার, দেখুন না তাতে কত সুখ! আর আমরাও বুঝিয়ে দেবো যে, পুরুষের দাসীত্বই আমাদের একমাত্র কাম্য নয়। আমরাও মানুষ―মানুষের অবশ্যপ্রাপ্য অধিকার লাভের ইচ্ছা ও শক্তি আমাদেরও আছে। আর, ন্যায়সঙ্গত বলে একদিন তা আমরা অধিকারও করব।”

 মীনা ঝাড়নখানা দেওয়ালের একটা হুকে টাঙ্গাইয়া রাখিয়া একটুখানি মিষ্ট হাসিয়া কহিল―“কে জানে ভাই, ঠাকুরপো ত বলেন আমরাই ওঁদের সংসার-যাত্রার পথে