পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৬৩

যদি ঠিক্‌ এমন ব্যবহার না করিয়া অন্য কোনরূপ কিছু করিত, তবে সেই হয়ত তাহাকে অভদ্র আখ্যানে আখ্যাত করিতে ছাড়িত না। অন্যায় যে কোথায় তাহা ধরা পড়িতেছিল না বলিয়াই বিরক্তি বাড়িতেছিল। মনে হইতেছিল, এই লোকটিকে হার মানানই যেন তাহার এখনকার অবশ্য কর্ত্তব্য।

 নারী যে সত্যই ঘৃণা বা অবজ্ঞার পাত্রী নহে, ঐ রণেন্দ্রই একদিন স্বেচ্ছায় ইহা স্বীকার করিবে―তবে তাহার অপমানের শোধ যাইবে। কিন্তু ঐ লোকটির ঘৃণা বা প্রশংসালাভে তাহার যে কি ক্ষতি বৃদ্ধি হইতে পারে, এইটুকুই কেবল তাহার মনে পড়িতেছিল না।

 আজকাল রণেন্দ্রকে উপেক্ষা করিয়া চলা, তাহার সম্বন্ধে নিজকে সম্পূর্ণ অনাসক্ত উদাসীন দেখান―ইহাই যেন তাহার সর্ব্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় কর্ম্ম হইয়া উঠিয়াছিল। সারাদিন নানা উপায়ে নানা ছন্দে সে কেবল তাহাকে আঘাত দিতেই ভালবাসিত। কিন্তু আঘাত ঠিক্ লক্ষ্য স্থলে পৌঁছাইতেছে কি না, সময় সময় মনে এমন সন্দেহও জাগিত। রণেন্দ্রের তীব্র ঔদাস্যের বর্ম্মে ঠেকিয়া অনেক সময় তাহার তাচ্ছিল্যের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তীরগুলি ফিরিয়া তাহারই বক্ষে আসিয়া বিঁধিত।