পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৭৯

ধরিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু তাহার শরীরের ভরে, অথবা সেখানকার মাটি আলগা থাকায়, যে কারণেই হইক, কতকটা তীর-ভাঙ্গা মাটির চাপের সহিত সে গড়াইয়া সু-উচ্চ তীরভূমি হইতে একেবারে নদী-কিনারে আসিয়া পড়িল।

 এই অভূতপূর্ব্ব ঘটনায় সে এমনি স্তম্ভিত হইয়া গেল যে, গড়াইয়া পড়িবার সময় কঠিন মৃত্তিকাস্তূপে ও আগাছায় তাহার দেহের স্থানে স্থানে ছড় লাগিয়া ও কাপড় ছিঁড়িয়া গেলেও সে তাহা অনুভব করিতে পারিল না। যাহার জন্য এই বিপত্তি, সেই হারানিধি শালখানি তাহার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়িয়া গিয়া বালুর উপর লুটাইতেছিল। অমিয়া চাহিয়া দেখিল, কিন্তু অভিমানের বৈরাগ্যে তাহাকে উঠাইয়াও লইল না―উহারই অবাধ্যতার জন্য আজ তাহার এই দুরবস্থা!

 অন্ধকার ক্রমেই ঘনাইয়া আসিতেছিল। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ আসন্ন ঝড়ের সম্ভাবনা বুঝাইয়া দিল। নদীর কলোচ্ছ্বাস, স্থানটি যে নিরাপদ নহে, তাহাই যেন কান্নার সুরে জানাইতেছিল। নদীতীরে যতদূর দৃষ্টি যায়, অমিয়া চাহিয়া দেখিল, উপরে উঠিবার কোথাও পথরেখা দৃষ্ট হয় না। পাহাড়ের মত উচ্চ তীরভূমি। নদীজলও সমরেখা