পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
স্রোতের গতি

বিশিষ্ট নহে। কোথাও তীর হইতে দূরে, কোথাও একেবারে তীর ঘেঁসিয়া চলিয়া গিয়াছে। ধারে ধারে চলিয়া সে যে কোনো ঘাটে গিয়া পৌঁছাইবে তাহারও সম্ভাবনা নাই।

 তাহার চীৎকার করিয়া কাঁদিতে ইচ্ছা করিতেছিল। সে ভাবিয়া পাইল না, এ অ-স্থানে কে তাহার সংবাদ লইতে আসিবে। এ সম্ভাবনা কাহারই বা মনে হইবে? এত রাত্রি পর্য্যন্ত সে ত কখন বাহিরে থাকে না। মীনা হয় ত এতক্ষণ উত্তমকে হারিকেন লইয়া তাহার খোঁজে পাঠাইয়াছে—আহা উত্তম যদি এদিকে আসে। কিন্তু কেনই বা তা আসিবে? সে ত তাহার মত পাগল নয়, যে এই লোকালয়ের বাহিরে পাহাড়ের মত উঁচু পাড় হইতে লাফ দিয়া জলে পড়িবার সম্ভাবনা কল্পনা করিতে পারিবে? সে যখন সম্ভাবিত স্থানগুলি খুঁজিয়া দেখিয়া বাড়ী গিয়া খবর দিবে—‘কোথাও পাওয়া গেল না’—তখন সেখানে কি কম ভয় ভাবনা পড়িয়া যাইবে! মীনা হয় ত কাঁদিতেই আরম্ভ করিবে। অমিয়া কল্পনায় সে দৃশ্যটি যেন প্রত্যক্ষ দেখিতেছিল। প্রাণতোষবাবু লণ্ঠন-হাতে উত্তমকে অনুবর্ত্তী হইবার আদেশ দিয়া আর একবার খোঁজা জায়গাগুলি হয়ত খুঁজিয়া দেখিবেন। তারপর শুষ্কমুখে বাড়ী ফিরিয়া