পাতা:হরিলক্ষ্মী.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
হরিলক্ষ্মী

পিসিমা হায় হায় করিয়া উঠিলেন। লক্ষ্মী মৃদু কণ্ঠে কহিল, কেন দুঃখ করচ পিসিমা, আমার দেহ ভাল নেই বলেই খেতে পার্‌লাম না—মেজবৌয়ের রান্নার ত্রুটি ছিল না।

 হাত-মুখ ধুইয়া আসিয়া নিজের নির্জ্জন ঘরের মধ্যে হরিলক্ষ্মীর যেন দম বন্ধ হইয়া আসিতে লাগিল। সর্ব্বপ্রকার অপমান সহিয়াও বিপিনের স্ত্রী হয় ত ইহার পরেও এই বাড়িতেই চাক্‌রী করা চলিতে পারে, কিন্তু আজকের পরে গৃহিণীপনার পণ্ডশ্রম করিয়া তাহার নিজের দিন চলিবে কি করিয়া? মেজবৌয়ের একটা সান্ত্বনা তবুও বাকি আছে—তাহা বিনা দোষে দুঃখ সহার সান্ত্বনা, কিন্তু তাহার নিজের জন্য কোথায় কি অবশিষ্ট রহিল!

 রাত্রিতে স্বামীর সহিত কথা কহিবে কি, হরিলক্ষ্মী ভাল করিয়া চাহিয়া দেখিতেও পারিল না। আজ তাহার মুখের একটা কথায় বিপিনের স্ত্রীর সকল দুঃখ দূর হইতে পারিত, কিন্তু নিরুপায় নারীর প্রতি যে মানুষ এত বড় শোধ লইতে পারে, তাহার পৌরুষে বাঁধে না, তাহার কাছে ভিক্ষা চাহিবার হীনতা স্বীকার করিতে কোনমতেই লক্ষ্মীর প্রবৃত্তি হইল না।

৩৮