পাতা:হলুদ পোড়া - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Gł8 হলুদ Ç?tiԿl ও ডাকাতটাকে সঙ্গে এনেছেন কেন ? রাধা হাসিল, আত্মরক্ষার জন্য । অতখানি অনুগত অন্ধ শক্তি আর কোথায় পাব ? শক্তির অন্ধতা বিপজ্জনক অন্যের পক্ষে হতে পারে, আমার পক্ষে নয় । বিপজ্জনক অন্ধশক্তি পৃথিবীতে আছে বলেই ওকে সঙ্গে এনেছি। নইলে কথা সে শেষ করিতে পারিল না। বারান্দার শেষপ্রান্তে কোণের ঘরখানা অন্ধ বৃদ্ধের, সেদিক হইতে কড়া তামাকের দুৰ্গন্ধ ভাসিয়া আসিতেছিল। অকস্মাৎ সে-ঘরে এমন বীভৎস একটানা কাসির শব্দ আরম্ভ হইয়া গেলে যে হেরম্ব চমকাইয়া উঠিল । ওকি ? কে কাসে অমন করে ? রাধা পাংশু মুখে বলিল, আমার সেই অভিভাবক। বলিয়া সে । দ্রুতপদে অন্ধের ঘরের দিকে চলিয়া গেল। হেরম্ব স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া। রহিল। ওই শীর্ণকান্স মুমূর্ষু বৃদ্ধ এমন ভয়ানক শব্দ করিয়া কাসে ! কাসি যেন আর থামিতে চায় না। একটা প্ৰকাণ্ড বকষন্ত্রের মধ্যে তোড়ে জল প্ৰবেশ করিবার চেষ্টায় মুহুমুৰ্হি থামিয়া থামিয়া গৰ্জন আরম্ভ করিয়াছে। হেরম্বের মনে "হইল আর খানিকক্ষণ এভাবে কাসিলে বৃদ্ধের অঙ্গ প্ৰত্যঙ্গগুলি খসিয়া চতুর্দিকে ছিটকাইয়া পড়িবে। খানিক পরে দম আটকানোর মত একটা বিশ্ৰী আওয়াজ হাঁটুয়া কাসি থামিয়া গেল । * রাধা ফিরিয়া আসিলে হেরম্ব বলিল, এতো দেখছি সাংঘাতিক কাসি ? রাধার ফ্যাকাসে মুখে ধীরে ধীরে রক্ত ফিরিয়া আসিতেছিল, মৃদুস্বরে সে বলিল, হঁ্যা, অনেকদিন ধরে’ ভুগছেন। ভুগে ভুগেই ওঁর এমন চেহারা হয়েচ, নইলে বয়স খুব বেশী নয়। মোটে চল্লিশ ।