পাতা:হলুদ পোড়া - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

GS হলুদ পোড়া হইয়া উঠে, তিনটা না বাজিতেই আবার সে বাহির হইয়া যায়। ফেরে রাত্রি আটটা নটায় । তখনও কিন্তু সে নিজেকে বিশ্রাক্ষেত্র অবকাশ দেয় না। পড়ার ঘরে বসিয়া মোটা মোটা ডাক্তারি বই পড়িতে আরম্ভ করে । সুমতির মনে হয়, শোবার ঘরে ঢুকিবার সময় পিছাইয়া দেওয়ার ইচ্ছার কাছে তাহার ক্রশান্তি হার মানিয়াছে। এমন খারাপ কথা মনে হয় বলিয়া মনে মনে নিজের উপর সুমতি: রাগ করে। অলকা এদিকে নিত্যকার কলহ ও কান্নার জন্য থাকে ব্যাকুল হইয়া, বেচারীর জীবনে এখন ওইটুকুই বৈচিত্ৰ্য ; অক্ষয় ফিরিয়াছে টের পাইলেই * এমন কাণ্ড আরম্ভ করিয়া দেয় যে ও ঘরে উঠিয়া না গিয়া অক্ষয়ের আর উপায় থাকে না । অলকা বলে, “ও ঘরে এত কি মধু ? এঘরে বসে পড় । --- স্থাখে। গো, গালে আমার একটা ব্ৰণ উঠেছে। বড় ব্যথা ।” চটচটে ঘামে ভেজা অলকার গার্ল-কে যেন আঠা মাখাইয়া রাখিয়াছে। অক্ষয় আদর কক্সিা তাহার গালে হাত বুলাইয়া দেয়, দুই গালে একটি ব্রণও সে খুজিয়া পায় না, সস্নেহে বলে, “ইস, বডড, ঘোমেছ যে ” * জীবন্ত পত্নীর শবের মত শীতল ক্লেদাক্ত স্পর্শ আঙ্গুল বাহিয়া উঠিয়া অক্ষয়ের মনে ধাক্কা দেয়। কিনা কে জানে। বোধ হয় দেয় না। শব ঘাটা অক্ষয়ের বহুদিনের অভ্যাস । ইহার পর খানিকক্ষণ অলকা চুপ করিয়া থাকে, তারপর প্রথমে ভালভাবেই কথা বলিতে আরম্ভ করে এবং - তাহা নাক্লিশ ও কান্নায় পরিবৰ্ত্তিত হইয়া যাইতে বেশী সময় লাগে না। কিন্তু অক্ষয় এমনি