পত্রবাহক বিশ্বাসে দুজনেই ত্রস্ত হইল। নতুবা এমন সুখজনক আলোচনার মধ্য হইতে কানাই সিংকে এত শীঘ্র কেহ উঠাইতে পারিত না।
খানিক পরে উত্তেজিতভাবে ফিরিয়া আসিয়া জানাইল, রাজাবাবুর লোক নয়, ব্যারিষ্টার সাহেব সুষমার দুদিনের কাজ কামায়ের কৈফিয়ৎ কাটিতে আসিয়াছেন। সে অনেক করিয়া বলিয়াছিল যে ববুয়ার এখন বড় অসুখ, দেখা কিছুতেই হইবে না, তাহাতে কিছুতেই তিনি বিশ্বাস করিতে চাহেন না। শেষকালে কানাই সিংকে বিরক্ত দেখিয়া একখানা পাঁচ টাকার নোট বাহির করিয়া তাহাকে বলেন, দেখা করাইয়া দাও তো এটা পাইবে! কানাই তাঁহাকে উত্তম মধ্যম ঝাড়িয়া দিত, শুধু পাছে ববুয়ার মনীবকে চটাইলে ববুয়া তার উপর রাগ করে, তাই সে পারে নাই। এই বলিয়া বৃদ্ধ কাঁদো কাঁদো গলায় সাগ্রহে বলিয়া উঠিল “অমন নোকরী তুই করিস নে খোঁকি! হামি রাজাবাবুকে বল্বো তোর টাকায় আঁটচে না আর কিছু বেড়িয়ে দিতে। হামার রাজাবাবু তেমন নয়।”
কানাই সিংহের আনিত সংবাদে এদিকে সুষমার অবস্থা একেবারেই শোচনীয় হইয়া উঠিয়াছিল। আতঙ্কে আঁৎকাইয়া উঠিয়া সে ঘরের দিকে সভয় দৃষ্টি রাখিয়া ঊর্দ্ধশ্বাসে বলিয়া উঠিল “কিছুতে না, কিছুতে না, সিং-জী। দেখ যেন সে আমার বাড়ীতে না ঢুকতে পারে। তুমি যে করে হয়, তাড়াও ওকে, তাড়াও।—যদি এখানে এসে পড়ে— শিগগির যাও।”
বিস্মিত কানাই সিং কি বলিবার জন্য মুখ খুলিতে গেলে, দারুণ অধৈর্য্যের সহিত সে তাহাকে ঠেলিয়া দিল’ “আঃ যাও না সিং-জী, এক্ষুণি হয়ত এখানে এসেই উপস্থিত হবে।”
কানাই সিং প্রস্থান করিলে ছুটিয়া আসিয়া সুষমা ঘরের সকল