পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্বিংশ পরিচ্ছেদ

রোগ মসীঢালা কালীতনু তার
লয়ে প্রজাগণে পুর-পরিখার
বাহিরে ফেলেছে, করি
পরিহার বিষাক্ত তার সঙ্গ।

—কথা

 নিরঞ্জন চলিয়া গেলে পরিমল তার জন্য যে এতখানি শূন্যতা বােধ করিবে তা বােধ করি তার স্বপ্নেও জানা ছিল না। ইদানীং পড়ার দায় থাকায় সে বেশ প্রসন্নচিত্তেই যখন তখন খুঁজিয়া পাতিয়া তাহার সঙ্গে একটু গল্প গুজব করিতে আসিত। সেই অবসরে তার ঘরের বিছানার আহারের ও পরিচ্ছদের তত্ত্বাবধান করাও তার একটা কাজের মধ্যেই হইয়া দাঁড়াইয়াছিল। এই অপ্রিয়দর্শন ভগ্ন দেহমন লােকটীর মধ্যে পরিমল যেন তার পূর্ব্ব স্মৃতির একটুখানি সৌরভ পাইত, তাই তাহার পরে তাহার পূর্ব্ব বিরাগ দিনে দিনেই হ্রাস হইয়া আসিতেছিল। হঠাৎ সুষমা আসিয়া তাহাকে চিলের মতন ছোঁ মারিয়া লইয়া যাওয়াতে হয়ত সে তার উপর একটু বেশী করিয়াই চটিত যদি না এর মধ্যে জড়িত থাকিতেন তাহারই স্বামী। নিঃসঙ্গ পরিমলের অবসরকাল ক্ষেপের একটুখানি অবলম্বন নিরঞ্জনকে যে তাহার স্বামীর পরিবর্ত্তে টানিয়া লইয়াই তাহার ঘাড়ের সুষমারূপী প্রেতিনীটা বিদায় হইয়াছে এই কথা মনে করিয়া নিরঞ্জনকে তার এতই শ্রদ্ধা হইল যে সে বলিবার নয়। হাজার বার করিয়াই তার তখন মনে হইল যে, কথায় যে বলে—যাকে রাখো, সেই রাখে—তা বাপু এ ঠিকই!—ভাগ্যে উনি ওটাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিলেন, তাই না আজ নিজে বেঁচে গেলেন, অন্ততঃ আমি তো