পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ

প্রভু! এলেম কোথায়!
বরষ গত হ’ল জীবন বহে গেল,
কখন কি যে হ’ল জানিনে হায়!
আসিনু কোথা হ’তে, যেতেছি কোন্ পথে,
ভেসেছি কালস্রোতে তৃণের প্রায়।
মৃত্যুসিন্ধুপানে চলেছি প্রতিক্ষণ,
তবুও দিবানিশি মোহেতে অচেতন,
জীবন অবহেলে, আঁধারে দিনু ফেলে,
কত কি গেল চলে, কত কি যায়।

—অজ্ঞাত

 কালীপদর বাড়ী যখন পৌঁছলাম তখন সন্ধ্যার বড় দেরি নেই। ওযে অত গরীব ছিল তা আমি কোন দিন জানতে পারিনি। সামনের দরজাব একটা পাল্লা ভেঙ্গে বোধ করি কোথায় চলে গেছে, আর একখানা বাতাসে ঢক্ ঢক্‌ শব্দ করছে। বাড়ীখানা এক সময়ে যে গাঁয়ের মধ্যে সব চাইতে বড় লোকেরই বাড়ী ছিল, সে আজও তার বিরাট বপু দেখেই বেশ বোঝা যায়। হলে হবে কি, আজ যে তার এ গাঁয়ে সবার চাইতেই দশা মন্দ, সেও তো আমি একটু ক্ষণের মধ্যেই দেখতে পেলেম।

 “উঠানে তুলসীমঞ্চে প্রদীপ দিয়ে একটী কিশোরী মেয়ে তার ময়লা কাপড়ের আঁচলটুকু গলায় জড়িয়ে প্রণাম করছিল, আমায় দেখতে পেয়েই সেই আঁচল সে গায়ে টেনে দিলে, মুখের চেহারা থেকেই জান্‌তে পারলুম যে সে আমার কালীপদর বোন সুখদা।

 “সুখদার মা যত পারলেন কাঁদলেন, জন্মের মতন দ্বীপান্তরিত ছেলের