পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হারানাে খাতা।
৭৭

সে প্রস্তাব করিল—“ছাপাখানার কোন কাজ দেওয়া চলে না?”

 নরেশ কহিলেন “দেখি, তাই না হয় কোন কিছু যদি পারে। বাংলাটা কি রকম জানে বুঝলে কিছু? ইংরাজী যে মন্দ জানে না, সেটা আমি জানতে পেরেছি। কিন্তু বাংলা যদি তেমন—”

 পরিমল মুখ টিপিয়া একটু হাসিয়া উঠিয়া গিয়া এক টুকরা কাগজ লইয়া আসিল ও উহা স্বামীর হাতে দিয়া বলিল “পড়ে দেখ।”

 নরেশ কাগজটার ভাঁজ খুলিয়া দেখিলেন তাহার ভিতর পৃষ্ঠায় একটা কবিতা লেখা। কৌতূহলী হইয়া পড়িলেন,—

“কাঁদিতে এসেছি আমি কাঁদিয়াই চলে যাব,
এসেছি অনন্ত হতে অনন্তেই মিশাইব।
দুঃখের তরঙ্গ তুলি, এসেছি আপনা ভুলি,
খুঁজিব বিরাট বিশ্ব কোথা গেলে সীমা পাব।

জগতে হবে না সুখী এ পোড়া পরাণ মন।
অসীম দুঃখেরে আমি করে আছি আলিঙ্গন।
আপনি নীরবে রহি, আপন যাতনা সহি,
অপরে করিতে দুঃখী চাহে নাকো এ জীবন।

ভবের সুখের আশা করিয়াছি বিসর্জ্জন।
না চাহি কাহারও স্নেহ কাহারও ভালবাসা,
রাখিনে রাখিনে মনে পার্থিব প্রেমের আশা
কারও উপেক্ষার হাসি, সহিতে গঞ্জনা রাশি—”

 কবিতা অসমাপ্ত। নরেশ পাঠশেষে মুখ তুলিয়া প্রশ্ন করিলেন, “কে লিখেছে—নিরঞ্জন?”

 পরিমল মাথা দুলাইয়া সায় দিল। তারপর বলিল “আরও দুটো একটা