পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
হারানাে খাতা।

ওঁর টেবিলে পড়ে থাক তে দেখেছি, একটা মোটে ক’টা লাইন লেখা। সেটা আমার মনেই আছে।

পাবে কি না পাব ফিরে কেন বৃথা এত ভয়?
কেন, কেন এ সংশয়?
যখন দাঁড়াব গিয়ে তোমার চরণতলে,
আমার গচ্ছিত নিধি ফিরাইয়া দাও বলে,
না দিয়ে পারিবে কিগো ফিরাইতে দয়াময়!
তবে কেন এ সংশয়?

 দেখ, মাষ্টার মশাইএর বউ নিশ্চয় ছিল, মরে গেছে, তাইতে ওঁর বোধ হয় মাথা খারাপ হয়ে গেছে, না?—কিন্তু স্ত্রীকে কি রকম ভালবাসে বলতো?”

 নরেশ হাসিয়া নিজের স্ত্রীর গাল দুইটা টিপিয়া দিয়া জবাব দিলেন, “ঠিক যেন মহাদেবের সঙ্গে সমান! স্ত্রীটীও হয়ত সতী-ঠাক্‌রুণের মতই পতির জন্য দেহ ত্যাগ করে থাকবেন। তা না হলে কি আর অতটাই পারা যায়?”

 কথাটীর মধ্যে বেশ একটুখানি খোঁচা খাইয়া পরিমলও সেটুকু তৎক্ষণাৎ শোধ করিয়া দিল!— “তাই কি আর বল্‌তে পারা যায়? এই সেদিন কালীঘাটে একটী মেয়ে স্বামীর অবস্থা খুব খারাপ দেখে আর ডাক্তারের মুখে ‘আশাহীন’ কথাটা শুনেই স্বামীকে ছেড়ে থাকতে পারবে না বলে তক্ষুনি নিজের প্রাণটা নষ্ট করে ফেল্লে, কিন্তু স্বামী ভদ্রলোকটী সে যাত্রা রক্ষা পেয়ে গেলেন এবং স্ত্রীর অত বড় আত্মত্যাগের মূল্য শোধ করলেন কি দিয়ে জানো? বসর না ঘুরতেই একটী নূতন বউ ঘরে এনে। এই তো সব তোমরা!”

 নরেশ এ ঘটনাটি জানিতেন, কাজেই মাথা পাতিয়া এই নিন্দাটুকু