পাতা:হারামনির অণ্বেষণ - দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ হারামণির অন্বেষণ। নাই—উচ্চশ্রেণীর কবিদিগের মনে যখন ঈশন এবং বাসনা এক হইয়া যায়, তখন দুই ব্রহ্মাণ্ডের সেই সন্ধিস্থানটিতেই আনন্দের ফোয়ারা খুলিয়া যায়। কাব্যের উচ্ছাসকালে কবির জ্ঞান এবং প্রাণ হয় যে, এক, তা তো জানাই আছে ; কিন্তু এক যে হয়— ‘ কিসের গুণে হয় ?, কবির নিজের গুণে হয়—না আর-কোনো কিছুর છે: হয় ? বৃহৎব্রহ্মাণ্ডের সহিত কবির ক্ষুদ্র ব্রহ্মাও একীভূত হইলে—তবেই কবির জ্ঞান এবং প্রাণ একীভূত হইতে পারে—তা ভিন্ন অন্ত কোনো প্রকারেই তাহা হইতে পারে না। কোনো কবিই বৃহংব্রহ্মাও হইতে স্বতন্ত্র থাকিয়া আপনার নিজগুণে কবি হইতে পারেন না। কবির প্রাণ জ্ঞান এবং মন একরকমের সংচিং এবং আনন্দ, আর, সেই জন্ত কবি একরকমের স্বাধীন পুরুষ, এ কথা সত্য ; কিন্তু কবি কি রকমের সচ্চিদানন্দ–কি রকমেরই বা স্বাধীন পুরুষ—সেইটিই জিজ্ঞাস্ত । প্রজাবৰ্গ যখন রাজপুত্রকে রাজা সম্বোধন করিয়া বলে যে, এ সমস্ত রাজ-ঐশ্বৰ্য্য তোমারই, তখন রাজপুত্র যে-রকমের রাজা হয়, কবি সেই রকমের সচ্চিদানন্দ স্বাধীন পুরুষ। পিতামাতার গুণ যে পুত্রকন্যাতে বৰ্ত্তিবে তাহাও আশ্চর্য্যের বিষয় নহে, আর, মৰ্ত্তবাসী কবির প্রাণ জ্ঞান এবং মন যে দেবারাধ্য সংচিৎ আনন্দ হইবে তাহাও আশ্চর্য্যের বিষয় নহে। আশ্চৰ্য্য এই যে, প্রজাবর্গের কথার প্রকৃত মৰ্ম্ম বুঝিতে না পারিয়া রাজপুত্ৰ মনে করে যে, আমিই রাজাধিরাজ মহারাজ—পিতা কেহই নহে। রাজপুত্র যদি সংপুত্র হয় তবে সে অবশু বলিতে পারে যে, পিতার রাজাই -আমার রাজ্য, পিতার মহিমাই আমার মহিমা ; কিন্তু তাহার অর্থ এ নহে যে, পিতা হইতে স্বতন্ত্ররূপে আমিই এ রাজ্যের রাজা । ফল কথা এই যে, প্রকৃতি পুরুষের অভেদস্বরূপ সচ্চিদানন্দ