পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হাস্যকৌতুক

এত ভাবিস তুইই বল দেখি, উপস্থিত কাজ উপস্থিত ভাবনা ছেড়ে কি এই সব বাজে ভাবনা নিয়ে থাকা ভালো? সকল ভাবনারই তো সময় আছে।

 নরহরি। এ কথাটা বড়ো গুরুতর মা! আমি হঠাৎ এর উত্তর দিতে পারব না। এটা কিছুদিন ভাবতে হবে— ভেবে পরে বলব।

 মা। আমি যে কথাই বলি তোর ভাবনা তাতে কেবল বেড়েই ওঠে, কিছুতেই আর কমে না। কাজ নেই বাপু, আমি আর-কাউকে পাঠিয়ে দিই।

প্রস্থান

মাসিমা

 মাসিমা। ছি নরু, তুই কি পাগল হলি? ছেঁড়া চাদর, একমুখ দাড়ি— সম্মুখে ভাত নিয়ে ভাবনা! সুবলের মা তোকে দেখে হেসেই কুরুক্ষেত্র!

 নরহরি। কুরুক্ষেত্র। আমাদের আর্যগৌরবের শ্মশানক্ষেত্র। মনে পড়লে কি শরীর লোমাঞ্চিত হয় না। অন্তঃকরণ অধীর হয়ে ওঠে না। আহা কত কথা মনে পড়ে! কত ভাবনাই জেগে ওঠে! বল কী মাসি! হেসেই কুরুক্ষেত্র! তার চেয়ে বল না কেন কেঁদেই কুরুক্ষেত্র।

অশ্রুনিপাত

 মাসিমা। ওমা, এ যে কাঁদতে বসল! আমাদের কথা শুনলেই এর শোক উপস্থিত হয়। কাজ নেই বাপু।

প্রস্থান

দিদিমা

 দিদিমা। ও নরু, সূর্য যে অস্ত যায়।

২৪