পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রোগীর বন্ধু

রেলগাড়িতে দুঃখীরাম ও বৈদ্যনাথবাবু

 বৈদ্যনাথ। (মাথায় হাত দিয়া) উ-উ-উঃ।

 দুঃখীরাম। (দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া) হা—হাঃ।

কাতবভাবে বৈদ্যনাথের প্রতি নিরীক্ষণ

 বৈদ্যনাথ। (দুঃখীরামের মনোযোগ দেখিয়া) দেখছেন তো মশায় ব্যামোর কষ্টটা তো দেখছেন।

 দুঃখীরাম। না, আমি তা দেখছি নে। আপনাকে দেখে আমার পুনর্বার ভ্রাতৃশোক উপস্থিত হচ্ছে। হা হাঃ।

নিশ্বাস

 বৈদ্যনাথ। সে কী কথা।

 দুঃখীরাম। হাঁ মশায়। মরবার সময় তার ঠিক আপনার মতো চেহারা হয়ে এসেছিল—

 বৈদ্যনাথ। (শশব্যস্ত হইয়া) বলেন কী?

 দুঃখীরাম। যথার্থ কথা। ওই-রকম তার চোখ বসে গিয়েছিল, গালের মাংস ঝুলে পড়েছিল, হাত-পা সরু হয়ে গিয়েছিল, ঠোঁট সাদা, মুখের চামড়া হলদে–

 বৈদ্যনাথ। (আকুল ভাবে) বলেন কী মশায়? আমার কি তবে এমন দশা হয়েছে? এ কথা আমাকে তো কেউ বলে নি—

 দুঃখীরাম। কেনই বা বলবে। এ-সংসারে প্রকৃত বন্ধু কেই বা আছে।

দীর্ঘনিশ্বাস

 বৈদ্যনাথ। ডাক্তার তো আমাকে বারবার বলেছে আমার কোনো ভাবনার কারণ নেই।

৩২