পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সূক্ষ্ম বিচার

 চণ্ডীচরণ। ভিন্ন ভিন্ন পদার্থের প্রভেদ অবগত হয়ে তাদের স্বতন্ত্র করে জানা। এই ঠিক তো!

 কেবলরাম। এ ছাড়া আর তো কিছু হতেই পারে না।

 চণ্ডীচরণ। তাহলে তুমি অস্বীকার করছ না।

 কেবলরাম। আজ্ঞে না।

 চণ্ডীচরণ। যদিই অস্বীকার কর তাহলে এ-সম্বন্ধে গুটিকতক তর্ক আছে।

 কেবলরাম। না না, আমি কিছুমাত্র অস্বীকার করছি নে।

 চণ্ডীচরণ। মনে করো, যদিই কর।

 কেবলরাম। (ভীতভাবে) আজ্ঞে না, মনেও করতে পারি নে।

 চণ্ডীচরণ। তুমি না কর, যদি আর কেউ করে।

 কেবলরাম। কারও সাধ্য নেই যে করে। এত বড়ো দুঃসাহসিক কে আছে!

 চণ্ডীচরণ। আচ্ছা বেশ, এটা যেন স্বীকারই করলে; তার পরে। নামই যদি পরিচয়ের একমাত্র উপায় হবে তবে কি আমার চেহারা পরিচয়ের উপায় নয়? আর আমার অন্যান্য লক্ষণগুলো―  কেবলরাম। আজ সম্পূর্ণ বুঝেছি নাম কাকে বলে তার নামগন্ধও জানি নে, আপনিই বলে দিন।

 চণ্ডীচরণ। ভাষার দ্বারা স্বতন্ত্র পদার্থের স্বাতন্ত্র্য নির্দিষ্ট করবার একটি কৃত্রিম উপায়কে বলে নামকরণ— যদি অস্বীকার কর―

 কেবলরাম। না, আমি অস্বীকার করি নে―

 চণ্ডীচরণ। কেবল তর্কের অনুরোধেও যদি অস্বীকার কর―

 কেবলরাম। তর্কের অনুরোধে কেন বাবার অনুরোধেও অস্বীকার করতে পারি নে।

৬৩