পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সূক্ষ্ম বিচার

বিশেষের মধ্যে, একটি পূর্ণপরিণত মনুষ্যের মধ্যে তার জন্মকাল হতে আজ পর্যন্ত যে-সকল পরিবর্তন অহরহ সংঘটিত হচ্ছে এবং মৃত্যুকাল পর্যন্ত হবার সম্ভাবনা আছে সেই পরিবর্তন ও পরিবর্তন-সম্ভাবনার কেন্দ্রস্থলে যে একটি সজ্ঞান ঐক্য বিরাজ করছে, তাকেই একদল লোক অর্থাৎ সেই লোকদের সজ্ঞান ঐক্য চণ্ডীচরণ নামে নির্দেশ করে।

 কেবলরাম। সর্বনাশ! মশায় বেলা হল। অত্যন্ত ক্ষুধানুভব হয়েছে, আহারও প্রস্তুত, এবার তবে না―

 চণ্ডীচরণ। (হাত চাপিয়া ধরিয়া) রোসো― আসল কথাটার কিছুই মীমাংসা হয় নি। সবে আমরা তার ভূমিকা করেছি মাত্র। তুমি জিজ্ঞাসা করছিলে আমি ভালো আছি কি না; এখন প্রশ্ন এই, তুমি কী জানতে চাও, আমার অন্তর্গত প্রাণী কেমন আছে জানতে চাও না মনুষ্য কেমন আছে জানতে চাও না―

 কেবলরাম। গোড়ায় কী জানতে চেয়েছিলুম তা বলা ভারি শক্ত। কিন্তু, আপনার সঙ্গে এতক্ষণ কথা কয়ে এখন অনুমান হচ্ছে আপনার সজ্ঞান ঐক্য কেমন আছেন এইটে জানাই অজ্ঞান আমার অভিপ্রায়। ছিল।

 চণ্ডীচরণ। অত্যন্ত কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলে।

 কেবলরাম। তাহলে মাপ করবেন— অপরাধ করেছি, এখন অনুতাপে এবং পেটের জ্বালায় দগ্ধ হচ্ছি। আহারের পূর্বে এ-রকম প্রশ্ন আমি আর কখনো আপনাকে জিজ্ঞাসা করব না।

 চণ্ডীচরণ। (কর্ণপাত না করিয়া) আমি ভালো আছি কিনা জিজ্ঞাসা করলে প্রথম দেখা আবশ্যক ভালোমন্দ কাকে বলে। তার পরে স্থির করতে হবে আমার সম্বন্ধে ভালোই বা কী আর মন্দই বা কী। তার পরে দেখতে হবে বর্তমানে যা ভালো তা—

৬৫