পাতা:হাস্য-কৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রােগের চিকিৎসা
১৯

 পিতা।  দেখি, পেটে হাত দিয়ে দেখি!

 হারা।  (শশব্যস্তে) ছুঁয়াে না, ছুঁয়ােনা, বড্ড ব্যথা হয়েছে। (পেটের মধ্যে ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌।)

 পিতা।  (স্বগত) সব বােঝা গেছে। হতভাগাকে জব্দ করতে হবে! (প্রকাশ্যে) তােমার রােগ সহজ নয়। এস বাপু তােমাকে হাঁসপাতালে নিয়ে যাই!

 হারা।  না বাবা, এমন আমার মাঝে মাঝে হয় আপনিই সেরে যায়! (ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌।)

 পিতা।  কৈরে, এত ক্রমেই বাড়ছে! চল্ আর দেরি নয়!

(টানিয়া লইয়া প্রস্থান)

তৃতীয় দৃশ্য

হারাধন। পিতা ও মাতা।

 মা।  (কঁদিতে কাঁদিতে) বাছার আমার কি হল গা!

 পিতা।  হাঁগাে, তুমি বেশী গােল কর না। হাঁসপাতালে নিয়ে গেলেই এ ব্যাম সেরে যাবে।

 মা।  আমি বেশী গােল করচি—না তােমার ছেলের পেট বেশী গােল করচে! (সভয়ে) এযে হাঁসের মত ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ করে! বাবা, হারু, তােকে আর আমি হাঁসের ডিম খেতে দেব না—তাের পেটের মধ্যে হাঁস ডাক্‌চে কি হবে! (ক্রন্দন)

 হারু।  (তাড়াতাড়ি) না মা, ও হাঁস নয়, ও তালের বড়া! হাঁস তােমাকে কে বলে! কখ্‌ খন হাঁস নয়। হাঁস হতেই পারে না। আচ্ছা, বাজি রাখ’ যদি তালের বড়া হয়।