পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।

ধর্ম্মাভিমানী মহাশয়দিগের মধ্যে অনেকই কর্ণ বিবরে অঙ্গুলি অর্পণ করিয়া থাকেন, এই ভয়ানক দোষাবহ কার্য্যসমূহ নিবারণ করিবার নিমিত্ত যেখানে এতাদৃশ যন্ত্রনা সহ্য করিতে হইয়াছিল এবং লোক সকলে এতাদৃশ বিপক্ষতাচরণে প্রবৃত্ত হইয়াছিল, সেখানে অত্যল্প লোকের অনিষ্টকর এই জাতিভেদ কি প্রকারে বঙ্গদেশ হইতে উঠাইয়া দিবেন, যেহেতু ইহা পূর্ব্বোক্ত বিষয় সকলের ন্যায় সাধারণের বিশেষ কোন অনিষ্ট করিতেছে না, তবে কি প্রকারে সর্ব্ব সাধারণের হৃদয় হইতে ইহা তিরোহিত হইবে। এই জাত্যভিমান লোকের হৃদয় ভাণ্ডারে যে প্রকার দৃঢরূপে অবস্থিতি করিতেছে, আমি বোধ করি আর কিছুই সেরূপ হইতে পারে না, আমাদিগের দেশে যত প্রকার আচার ব্যবহার প্রচলিত আছে, সে সমুদয়ের মধ্যে যে কোন বিষয় হউক না কেন কেহ না কেহ অজ্ঞাত থাকিলেও থাকিতে পারেন, কিন্তু এই জাত্যভিমানটি সকলেরই হৃদয়ঙ্গম আছে, কি বালক, কি বৃদ্ধ, কি বনিতা এবিষয় কেহই অজ্ঞাত নহে,তবে কি প্রকারে একেবারে সাধারণের মন হইতে হঠাৎ যাইতে পারে এবং কি প্রকারেই বা সকলের মন হইতে এই বৃহৎ অভিমান দূর হইবে, কি প্রকারেই বা লোক সমূহের চির সংস্কার নষ্ট হইবে, কি প্রকারেই বা পরস্পরের একান্ন ভোজনে অভিরুচি জন্মিবে। দেখ অতি নীচ জাতি হড্‌ডি ও চণ্ডালদিগকে দৃষ্টি করিবামাত্র যখন ঘৃণা উপস্থিত হয়, তখন কি প্রকারে তাহাদের অন্ন পানীয় গ্রহণ করিতে সকলের অভিরুচি হইবেক, দুই এক জন গ্রহণ করিতে পারেন করুন কিন্তু সাধারণে তাহাতে কখনই প্রবৃত্ত হইতে