পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রন্থ রচযিত্রীর নিবেদন।

 আমি যে মহাত্মার কৃপাবলে এতাদৃশ সাহসিক কার্য্যে প্রবৃত্তা হইয়াছিলাম, প্রথমত তাঁহার নিকট আমার সমধিক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা কর্ত্তব্য বোধে আমি সর্ব্বসাধারণ সন্নিধানে আত্ম পরিচয় প্রদান করিতে বাধ্য হইলাম। আমি বাল্যাবস্থায় পিত্রালয়ে একটী বর্নও শিক্ষা করি নাই এবং শিক্ষা বিষয়ে আমার অভিলাষও ছিল না। অধিক কি কহিব কেহ নারীগণের বিদ্যা বিষয়ক কোন কথা উথাপন করিলে আমি বিরক্ত হইতাম এবং বিদ্যাভ্যাস করিলে যে অচিরাৎ বিধবা হয়, প্রাচীন পরম্পরাগত এই পুরাতন বাক্যটি অতি প্রযত্ন সহকারে হৃদয় ভাণ্ডারে ধারণ করিতাম। এইরূপে কিছুকাল গত হইলে পর অমার স্বামি শ্রীযুক্ত বাবু দুর্গাচরণ গুপ্ত মহাশয় আমাকে বিদ্যা শিক্ষা করাইবার নিমিত্ত অতিশয় ব্যগ্র হইলেন, কিন্তু আমি এক প্রকার বিদ্যাবিরোধিনী ছিলাম; সুতরাং তাঁহারং সেই যত্ন আমার পক্ষে অতিশয় কষ্টদায়ক হইল। আমি কোন মতেই তাঁহার উপদেশ বাক্য গ্রহণ করিতাম না, কিন্তু তিনি তাহাতেও নিরস্ত না হইয়া বরং আরও অধিক পরিমাণে চেষ্টিত হইলেন। পরে আমি অগত্যা তাঁহার সেই উপদেশ গ্রহণ করিলাম। তিনি বচনাতীত সন্তোষ সহকারে আমাকে শিক্ষা দিতে আরম্ভ করিলেন।

 ১৭৭১ শকের শ্রাবণ মাসে আমাকে বর্ণমালার প্রথম ভাগের উপদেশ দেন; আমি সেই অবধি গোপন ভাবে কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ অধ্যয়ন করিতাম এবং গুরুজন ভয়ে ভীত হইযা