পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।

তৃষ্ণা সহকারে সেই ভাবি পুত্রবধূ মুখমণ্ডল অবলোকন করণাশয়ে সেই পথ নিরীক্ষণ করিতেন, কিন্তু এক্ষণে সেই বন্ধু প্রাপ্ত হইয়া তাহাদিগের প্রতি যে রূপ ব্যবহার করিয়া থাকেন, সেই ব্যবহার আদির কিয়দংশ এই হীনাবস্থায় প্রকাশ হইতেছে। শ্বশ্রূগণ বিবাহ কালে বধূগণকে ক্ষীরালক্ত মিশ্রিত করত এবং তদ্বারা প্রস্তরময় ভোজন পাত্র পরিপূর্ণ করিয়া তদুপরি ঐ নববধূদিগকে দণ্ডায়মানা করিয়া এবং ব্রীহি ব্যুহ পরিপূরিত বেত্রময় পাত্র তাহারদিগের মস্তকোপরি স্থাপন,হন্তে সজীব, লেঠা মৎস্য, পিঠালি এবং কক্ষে জলপূর্ণ ঘটাদি প্রদান করত, এবং শনি বাদ্য বাদনাদি মঙ্গলাচরণ সহকারে অতীব সমাদরের সহিত ঐ বধূদিগকে গ্রহণ করেন, কিন্তু তাহার কিছু কাল পরেই বন্ধুদিগের প্রতি তাঁহাদিগের মধ্যে প্রায় অনেকেই তদ্বিপরীত ব্যবহার করিয়া থাকেন। আহা! লোকে যে বস্তু প্রাপ্তি আশয়ে পূর্বে বহু কামনা ও দেবতাদির নিকট মাননা করে, তাহার সেই বস্তু প্রাপ্তি হইলে সে যে কতই প্রযত্ন সহকারে তাহা রক্ষণাবেক্ষণ করে, কিন্তু শ্বশ্রূগণ ঐ প্রার্থনীয় বন্ধুগণকে এতাদৃশ যত্ন সহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করেন যে তাহাতে ঐ বধূগণের অবিশ্রান্ত অশ্রুপাত ব্যতিরেকে আর কোন মতেই দিনপাত হইবার সম্ভাবনা থাকে না। শ্বশ্রূগণ ঐ বন্ধুগণের বয়স ও শিক্ষা অশিক্ষাদির বিষয়ে কিছুমাত্র বিবেচনা করেন না। কেবল তাহাদিগের চরিত্র ও সর্ব্ব কর্ম্ম নিপুণতাদির বিষয়েই সবিশেষ মনোনিবেশ করিয়া থাকেন। কিন্তু কি প্রকারে সেই পথবর্ত্তিনী হইতে সমর্থ হইবে, তদ্বিষয়ক কোন প্রকার সদুপদেশ প্রদান করেন না,